স্থানীয় ও উপনির্বাচন ঘিরে সরব বিএনপি

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ

স্থানীয় ও উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে সরব হয়ে উঠছে বিএনপি। নির্বাচন কমিশন ও সরকারের অধীনে নির্বাচন করাটা পণ্ডশ্রম দাবি করলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতি মাথায় রেখে সব স্থানীয় ও উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ার সক্রিয় চিন্তা নিয়ে কাজ করছে দলটি। আগামী ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া উপজেলা, পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে মাঠপর্যায়ের নেতাদের কাছে বার্তাও যাচ্ছে।

একাদশ নির্বাচনের পর দলটি বলেছিল, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। যদিও পরে দলটি তাদের বক্তব্য থেকে সরে এসে বর্তমান ইসির অধীনেই উপনির্বাচন এবং সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। সামনে সব ধরনের নির্বাচনেও অংশ নিতে প্রস্তুত দলটি। তবে কদিন আগেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে যশোর-৪ ও বগুড়া-১ আসনের উপনির্বাচনে যায়নি বিএনপি।

এ নিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে, প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে, যখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলা হচ্ছে, এ সময়ে ভোট গ্রহণযোগ্য নয়। ঠিক এক থেকে দেড় মাসের মাথায় এখন আর আগের কারণগুলোর কথা বলছে না। যদিও দেশে করোনা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। করোনার এ পরিস্থিতির মাঝেই চারটি আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। ঢাকা-৫, ঢাকা-১৮, নওগাঁ-৬, সিরাজগঞ্জ-১ এবং পাবনা-৪ আসনে উপনির্বাচনের প্রার্থিতা ঠিক করতে দলের পার্লামেন্টারি বোর্ড গতকাল শনিবার প্রায় ২৯ জন প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলেছে।

হঠাৎ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির এক সিনিয়র নেতা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত যখন যাবই তাহলে যশোর-৪ ও বগুড়া-১ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে কেন নাটকীয়তা করা হলো? আমি যদি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কাছে এ প্রশ্ন রাখি, তাহলে আমার পদ থাকবে না। তবে এসব নাটক না করে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করলে দলেরও লাভ, নেতাদেরও লাভ।’

ভোটে অংশগ্রহণের বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশে যে দুঃশাসন চলছে, তার মধ্যে গণতন্ত্র সম্প্রসারণের জন্য যেখানে যতটুকু সুযোগ পাব, সেটা ব্যবহার করব। এর আগেও দেখেছি, নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন এবং ভোট এগুলোকে জাদুঘরে পাঠানোর জন্য সরকার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে। আমরা গণতন্ত্র ফেরানোর জন্য গত ১২ বছর নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম করছি। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নেতা থেকে তৃণমূলের নেতা কেউ ৫০টি আবার কেউ কেউ ২৫০ থেকে ৩০০ মামলা নিয়ে এই সংগ্রামে অংশ নিচ্ছেন। তাই আমরা উপনির্বাচনে অংশ নেওয়াকে সংগ্রামের অংশ হিসেবে নিয়েছি।’

রিজভী বলেন, ‘সরকার তার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নানা কিছু করতে পারে। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা হচ্ছে জনগণ। আর আমরা জনগণের শক্তির ওপর ভর করে এই উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।’

এদিকে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে দেশে রাজপথের কোনো রাজনীতি ছিল না। এ সময়ে রাজপথে কোনো মিছিল, মিটিং এবং সভা হয়নি। কিন্তু উপনির্বাচন সামনে রেখে গত বৃহস্পতি, শুক্রবার ও গতকাল বিএনপির প্রার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজধানীর নয়াপল্টন ও গুলশানে উৎসব আমেজে শোডাউন করেন। এ অবস্থা দেখে বিএনপির সিনিয়র নেতারা পর্যন্ত হতবাক। জাতীয় নির্বাচনের দেড় বছরের মাথায় একতরফা নির্বাচন নিয়ে নেতাদের যে আগ্রহ, তাতে দলের শক্তি সামর্থ্যরে বিষয়টি পুনরায় প্রমাণ হয়েছে।

ঢাকা-৫, ঢাকা-১৮, নওগাঁ-৬ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কর্মী-সমর্থক নিয়ে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। করোনা মহামারির মধ্যেও আসন্ন চার উপনির্বাচনে বিএনপির ২৯ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী তাদের মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ে দলীয় সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন।

তফসিল অনুযায়ী ঢাকা-৫ এবং নওগাঁ-৬ আসনে উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে ১৭ অক্টোবর, ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনের তফসিল কমিশন এখনো ঘোষণা করেনি।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...