বাংলাদেশী শিশু ধর্ষণকারির শাস্তি দাবিতে নিউইয়র্কে বিক্ষোভ

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:৫৪ অপরাহ্ণ

শিশুদের যৌন-নির্যাতন এবং যৌন হামলার কয়েকটি ঘটনায় অভিযুক্ত বাংলাদেশী আমেরিকান আক্কাস আলী ওরফে মোহাম্মদ আলী (৬৮)’র দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে তার বাড়ির সামনে ক্ষুব্ধ জনতা বিক্ষোভ করলেন। এ বিক্ষোভে ৯ বছর আগে ধর্ষণের একজন ভিকটিমও ছিলেন। এলাকার ভিনদেশীরাও ছিলেন সরব।

নিউইয়র্ক স্টেটের হাডসন সিটির প্রমেনেডি হিলের সন্নিকটে ৩০২, স্টেট স্ট্রিটে ১১ সেপ্টেম্বর বেলা সোয়া ২টা থেকে এ কর্মসূচির আয়োজন করে ‘জাগো হাডসন’ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এই সংস্থাটি দক্ষিণ এশিয়ান অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। বিক্ষোভ-সমাবেশে উল্লেখ করা হয় যে, গত কয়েক দশকে এই আক্কাস আলী কর্তৃক ধর্ষিতা হয়েছেন অন্তত: ৮ শিশু-কিশোর। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত তিনজন পুলিশে অভিযোগ করেছেন। অন্যেরা রয়েছেন দ্বিধাদ্বন্দে, সামাজিক লজ্জার আবর্তে। পরিবারের রক্তচক্ষুর ভয়ে।

বিক্ষোভকারিরা আশা করছেন যে, এলাকার সকল মানুষ যদি নিজের মা-বোন-খালা-ভাগ্নি-ভাতিজির সম্ভ্রমের প্রতি দায়বদ্ধ হয়ে পশুর মত আচরণে লিপ্ত ঐ আক্কাস আলীদের বিরুদ্ধে সরবহ ন, তাহলে অন্যেরাও সামনে আসবেন নিজের মধ্যে লুকিয়ে রাখা ঐ পাশবিকতার ঘটনা পুলিশে জানাতে। সে প্রত্যাশা নিয়েই ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত আক্কাস আলীর বাড়ির সামনে এ কর্মসূচি করা হলো।

এটি শেষ নয়, ন্যায়-বিচার নিয়ে সকলের মধ্যে সৃষ্ট শংকা দূর না হওয়া পর্যন্ত আবারো বিক্ষোভ করা হবে বলে জানান ‘জাগো হাডসন’র প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম জেরিন আহমেদ। স্মরণ করা যেতে পারে, ২০১৫ সালে ফারজানা মওসুমি সর্বপ্রথম পুলিশে অভিযোগের পর নানা কারণে সময়ক্ষেপন করেছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। লাগাতার কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে আক্কাস আলীকে সর্বপ্রথম গ্রেফতার করা হয় গত বছরের নভেম্বরে এবং তৃতীয় বারের মত গ্রেফতার হন এ বছরের মার্চে করোনা মহামারির প্রাক্কালে। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন বলে জানা গেছে। জুরিবোর্ডের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্ষণসহ নির্যাতন ও শিশুর নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে তাকে সর্বোচ্চ ২৫ বছর জেলে থাকতে হবে বলে জানান সেখানকার কলম্বিয়া কাউন্টির ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী। বিক্ষোভের সময় তিনি বাসার বাইরে বের হননি।

ধর্ষণকারির প্রতি ঘৃণা ও ধিক্কার জানিয়ে লেখা প্লেকার্ড হাতে জড়ো হওয়া নানা শ্রেণী আর বয়েসী লোকজনের সাথে হাডসন সিটির মেয়র কামাল জনসনসহ সিটির সুপারভাইজার লিন্ডা মৌউসম্যান, মাইকেল ছামিদাস, সিটির কর্মকর্তা টিফানি গ্যারিগস, কুইন্টন ক্রস ছিলেন। সকলেই মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী সরব ছিলেন। বাংলাদেশী এ্যাল্ডারমেনরা উপস্থিত না হওয়ায় আয়োজকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এই প্রবাসে বেড়ে উঠা জেমিন আহমেদ হচ্ছেন ‘জাগো হাডসন’র প্রধান সংগঠক। বাংলায় কথা বলতে পারেন কিন্তু লিখতে পারেন না। এজন্যে নিজের বাংলা বক্তব্য ইংরেজীতে লিখে সমাবেশের সামনে উপস্থাপন করেছেন প্রচন্ড ক্রোধ আর ক্ষোভের সাথে। সেই বক্তব্যেই সামগ্রিক পরিস্থিতি উপস্থাপিত হয়, যা ভিনদেশীদেরকেও আকৃষ্ট করে। এখানে জেমিন আহমেদের বক্তব্য হুবহু উপস্থাপন করা হলো।

জেমিন বলেন, ‘আমি পরিবারসহ এই হাডসনে ২০ বছর ধরে বাস করছি। এখানকার মানুষ এবং সমাজ আমার খুবই আপণ এবং প্রিয়। তাই হাডসনে যখন কোন অন্যায় বা অপরাধ হয়, আমি চাইলেও চুপ থাকতে পারি না। কারণ নিরবতা অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়। আর একজন মুসলিম হিসেবে এটা আমার পক্ষে সম্ভব না।’

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...