ঢাবি রেজিস্ট্রার ভবনের হয়রানি বন্ধে ফের হাসনাতের অবস্থান

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ৫:৪৩ অপরাহ্ণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে শিক্ষার্থী হয়রানি বন্ধে ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফের অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু হাসনাত আব্দুল্লাহ।

রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঢাবির রেজিস্ট্রার ভবন গেটের সামনে ফের এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তিনি। এর আগে ৩০ আগস্ট রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের হয়রানি বন্ধে অবস্থান করেছিলেন হাসনাত। সেই অবস্থান কর্মসূচি থেকে ৮ দফা দাবি পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি এবং ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন এই শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ভিসি স্যারকে এর আগে যখন স্মারকলিপি দিয়েছিলাম, তখন তিনি দাবিগুলো যৌক্তিক এবং তা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু ভিসি স্যার কথা রাখেননি এবং আজকে আমাকে রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে বাঁধা দেওয়া হয়েছে। সকাল ৯টায় অফিস টাইম থাকলেও, নয়টা চল্লিশে(৯.৪০) রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা অফিসে অনুপস্থিত। সেই ছবি তুলতে গেলে আমি বাঁধার সম্মুখীন হই। রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের ছবি তোলার আগে নাকি কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ছবি তুলতে হবে। এই অনিয়ম ভাঙ্গতে হবে।

আজকে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে আমার টানা অবস্থান কর্মসূচি চলবে। বেঁধে দেওয়া দশ কর্মদিবস শেষ হলেও রেজিস্টার বিল্ডিংয়ের সমস্যা সমাধানে ভিসি স্যার কোন পদক্ষেপ নেননি। আমার আট দফা দাবির একটি দাবিও পূরণ করেননি কিংবা দাবি পূরণে কোন ধরনের দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেননি।

তিনি আরও বলেন, রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের অবস্থা যা ছিল, এখনও ঠিক তা-ই রয়েছে। পর্যাপ্ত সময়, গঠনমূলক পরামর্শ, সময়পোযোগী দিকনির্দেশনা দেওয়ার পরও আট দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসনের অসহযোগিতামূলক আচরণে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমি ক্ষুব্ধ। এজন্য এবার আট দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমার অবস্থান কর্মসূচি চলবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের সেবা সম্পর্কে আবু হাসনাত আব্দুল্লাহ অনলাইনে একটি জরিপ পরিচালনা করেছেন। অনলাইনে পরিচালিত এ জরিপে দু’দিনে ঢাবির মোট ৭০০ সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী অংশ নেন। এতে তারা ঢাবির রেজিস্ট্রার ভবনের বিভিন্ন সেবার অভিজ্ঞতাসহ এ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

হাসনাতের জরিপের ফলাফল

১. ৮৯.২% শিক্ষার্থীর প্রশাসনিক ভবনের সেবার অভিজ্ঞতা ভয়াবহ ও অপ্রত্যাশিত।

২. সবচেয়ে ভয়াবহ তথ্য হলো ৬৮.৩% শিক্ষার্থীর মতামত হলো প্রশাসনিক ভবনে ঘুষ লেনদেন ও স্বজনপ্রীতির চর্চা হয়।

৩. সর্বোচ্চ সংখ্যক হয়রানি হয় ভর্তি শাখায়, বৃত্তি শাখায়, মার্কশীট শাখায় ও ট্রান্সক্রিপ্ট শাখায়(ক্রমানুযায়ী)।

৪. ৪০০ এর অধিক শিক্ষার্থীর শুনতে হয়েছে, “লাঞ্চের পরে আসুন”, “এটা এই রুমের কাজ না”, “কাগজ এখনো হল থেকে আসেনি “।

৫. মোট ৮৬.১% শিক্ষার্থী মনে করে প্রশাসনিক ভবনের বর্তমান কাজ ডিজিটাল বাংলাদেশ ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত,বিপরীত বা শূন্য।

৬. ৪০০ এর বেশি শিক্ষার্থীর অভিযোগ-সেবা দাতাদের কাছে সেবা গ্রহীতারা নিরুপায় এবং সেবা গ্রহীতাদের সময়ের কোনো মূল্য নেই।

৭. প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থীর মতে প্রশাসনিক ভবনের সেবার মান অপরিবর্তিত থাকার কারণ কর্মকর্তাদের সেচ্ছাচারিতা,স্বচ্ছতার অভাব।

৮. ৭২.৮% শিক্ষার্থী মনে করে সেবার মান উন্নয়নের জন্য প্রত্যক্ষ আন্দোলনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করা উচিত।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...