নতুন পারমাণবিক বোমারু বিমান ‘বি-২১’ উন্মোচন করেছে যুক্তরাষ্ট্র

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০২২, ৫:১৩ অপরাহ্ণ

মার্কিন মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি কোম্পানি নর্থরপ গ্রুম্যান কর্প শুক্রবার তাদের নতুন পারমাণবিক বোমারু বিমান বি-২১ রেইডার জেট উন্মোচন করেছে। নতুন এই বিমানটি মার্কিন বিমান বাহিনীর দূরপাল্লার স্টিলথ পারমাণবিক বোমারু বিমান বহরের জন্য তৈরী করা হয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার পামডেলে নর্থরপ গ্রুম্যানের একটি কারখানায় শুক্রবার একটি অনুষ্ঠানের বি-২১ বিমানটির উন্মোচন করা হয়। যেখানে প্রথমবারের মত নতুন এই বোমারু বিমানটিকে জনসাধারণের সামনে নিয়ে আসা হয়।

নতুন এই বোমরু বিমান বি-২১ রেইডারের নকশা করা হয়েছে ওপেন সিস্টেম আর্কিটেকচার প্রক্রিয়ায়। অর্থাৎ প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বিমানটিতে অভ্যন্তরীণ প্রযুক্তি আপগ্রেড করার সুযোগ আছে।

এটি দেখতে কিছুটা বি-২ বোমারু বিমানের অনুরূপ। দীর্ঘ-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ক্ষমতা এবং অত্যাধুনিক রাডারের চোখ ফাঁকি দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে এতে। এছাড়াও রয়েছে, মাঝ আকাশে রিফুয়েলিং ক্ষমতা এবং অন্য যেকোনও বিমানের চেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র বহন ক্ষমতা।

এদিকে স্পেস ডটকম জানিয়েছে, পাইলট ছাড়াও ওড়ার সক্ষমতা আছে নতুন বি-২১ বোমারু বিমানটির। এছাড়াও রাডার জ্যাম করার ও প্রতিপক্ষের যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির সক্ষমতাও এই বিমানের রয়েছে।

২০১০ সালে মার্কিন সবকারের পক্ষ থেকে পরবর্তী-প্রজন্মের দূরপাল্লার কৌশলগত এই বোমারু বিমান নির্মাণ করার জন্য ২৫.১ বিলিয়ন ডলারের বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছিল। সেসময় প্রতিটি বিমানের নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৫৫০ মিলিয়ন ডলার বা আজকের মুদ্রাস্ফীতি-সামঞ্জস্য করা মূল্যে প্রায় ৭৫০ মিলিয়ন হবে বলে অনুমান করা হয়েছিল।

মার্কিন বিমান বাহিনী অন্তত ১০০টি বিমান কেনার পরিকল্পনা করেছিল, যেগুলো মর্কিন বিমানবাহিনীর বর্তমানের সবচেয়ে শক্তিশালী বি-১ এবং বি-২ বোমারু বিমানগুলোকে প্রতিস্থাপন করবে।

এই উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৫ সালে চুক্তির আহ্বান করে মার্কিন সরকার। সেখানে লকহিড মার্টিন কর্পোরেশনসহ ৪০০টি মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তত কারককে পরাজিত নরথ্রপ গ্রুমান বি-২১ রেইডার নির্মাণের চুক্তিটি জিতে নিয়েছিল।

শুক্রবার নরথ্রপ গ্রুমানের অ্যারোনটিক্স সিস্টেমস এর মহাব্যবস্থাপক ডাগ ইয়াং এক বিবৃতিতে বলেন, বিমানটি সর্বাধুনিক উদ্ভাবনী শক্তি ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ফলাফল। এটি অত্যন্ত টেকসই, যার জন্য রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন হবে কম এবং অপারেশন খরচ হবে।

ডাগ ইয়াং বিমানটিকে একটি ষষ্ঠ প্রজন্মের বিমান বলে অভিহিত করে বলেন, এটি অন্যান্য বিমানের সাথে সংযোগ করার এবং সহজেই ভবিষ্যতের অস্ত্রগুলোকে এর সিস্টেমে যুক্ত করার ক্ষমতা রয়েছে। এছাড়াও বিমানটির উদয়ন ও অবতরণের সময় ন্যূনতম রাখা হয়েছে।

কোম্পানিটি জানিয়েছে, তাদের পামডেলের কারখানায় নির্মাণ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ে আছে ছয়টি নতুন বি-২১ রেইডার, অল্প সময়ের মধ্যেই যেগুলোর কাজ সম্পন্ন হবে। সেখানে নর্থরপ গ্রুম্যান, শিল্প অংশীদার এবং বিমান বাহিনীর ৮ হাজোরেরও বেশি কর্মী বর্তমানে এই প্রোগ্রামে কাজ করছে।

এদিকে, মার্কিন বিমান বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে বি-২১ রেইডারের প্রথম মিশন পরিচালনা করা হবে।

সূত্র: রয়টার্স, স্পেস ডটকম

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...