নভেম্বরে সড়কে ৬৪৩ প্রাণহানি, ৩০ শতাংশ বাইক দুর্ঘটনা

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৭ ডিসেম্বর ২০২২, ৬:৫০ অপরাহ্ণ

নভেম্বর মাসে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৫৮৬টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৬৪৩ জন। আহত হয়েছেন ৮২৬ জন। এসব দুর্ঘটনার বেশি ঘটেছে মহাসড়কে। মোট দুর্ঘটনার ৩০ ভাগেরও বেশি হয়েছে মোটরসাইকেলে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুরো নভেম্বরে রেলপথে ৬৪টি দুর্ঘটনায় ৫১ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ও ১০ জন আহত এবং ৭ জন নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সম্মিলিতভাবে ৬৬৮টি দুর্ঘটনায় ৭০৯ জন নিহত ও ৮৪০ জন আহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নভেম্বরে মোট দুর্ঘটনার ৬০ দশমিক ৫৮ শতাংশ হয়েছে আঞ্চলিক মহাসড়কে। ২৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ ফিডার রাস্তায় হয়েছে।

আর সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ হয়েছে ঢাকা মহানগরীতে। আর ০ দশমিক ১৭ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১ দশমিক ১৯ শতাংশ ঘটেছে রেলক্রসিংয়ে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ২৮৪ জন চালক রয়েছেন। ৮৭ জন পথচারী, ৮৫ জন নারী, ৮৯ জন শিশু, ৫০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭৪ জন শিক্ষার্থী, ২৩ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এছাড়া ১৫ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ২ জন এনএসআই সদস্য, ১২ জন পুলিশ সদস্য, ১ জন সেনা সদস্য, ৯ জন শিক্ষক, ১ জন আইনজীবী, ২ জন প্রকৌশলী, ১ জন মুক্তিযোদ্ধা, ২ জন চিকিৎসক ও ৭ জন সাংবাদিকের পরিচয় মিলেছে।

নিহতদের মধ্যে ২২৫ জন চালক, ৮৪ জন পথচারী, ৫৯ জন নারী, ৫৭ জন শিশু, ২৩ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪৯ জন শিক্ষার্থী, ১৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, ৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা, ৫ জন সাংবাদিক, ২ জন চিকিৎসক ও ১ জন এনএসআই সদস্যের পরিচয় মিলেছে।

এইমাসে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার ৩০ দশমিক ৪৭ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১১ দশমিক ৮১ শতাংশ বাস, ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৬ দশমিক ৭২ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস এবং ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, সড়কে দুর্ঘটনায় ৫৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা। ১৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ খাদে পড়ে, ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ বিবিধ কারণে, ১ দশমিক ১৯ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষ এবং ০ দশমিক ১৭ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে সংগঠিত হয়েছে।

যে কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা

বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, বিপদজনক অভারটেকিং, বেপরোয়া গতি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসায় দুর্ঘটনা বাড়ছে।

এছাড়াও ছোট যানবাহন ক্রমশ বৃদ্ধি, বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে সার্ভিস লেন না থাকায় ইজিবাইক, রিকশা, অটোরিকশা বিভিন্ন ফিডার সড়ক থেকে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে নেমে আসার ফলে এসব ছোট যানবাহন দূরপাল্লার বাস ও প্রাইভেটকারের গতি কমিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হওয়া, গুরুত্বপূর্ণ জংশনে, রাস্তার মোড় ও বাস স্টপেজ গুলোতে যানজট তৈরি করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকাংশ বাড়িয়ে দিচ্ছে।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...