ওসমানীতে চিকিৎসা নিতে আসা হাড়ভাঙা রোগীর কিডনি অপসারণ!

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০২৩, ৭:০৯ অপরাহ্ণ

সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কনুইয়ের হাড় ভাঙার চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর কিডনি অপসারণ করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন ভুক্তভোগী রোগী খছরু মিয়া।

আদালতের বিচারক আবদুল মোমেন আবেদনটি আমলে নিয়ে কোতোয়ালি থানা-পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় বিবাদী হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করেননি বাদী কানাইঘাট উপজেলার ফতেহগঞ্জ গ্রামের খছরু মিয়া। তবে গত বছরের ১৯ নম্বর হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করা সহকারী রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিবাদী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে খছরু মিয়ার আইনজীবী আমিনুল হক খান বলেন, আদালত সিলেট কোতোয়ালি থানা-পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, আদালত থেকে এমন কোনো অভিযোগের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা এখনো পাননি। নির্দেশনা এলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, কাজ করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে বাঁ হাতের কনুইয়ের হাড় ভেঙে যায় দিনমজুর খছরু মিয়ার। এরপর গত বছরের ১৮ অক্টোবর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এর মধ্যে ১৭ নভেম্বর সকালে চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে তার বাঁ হাতের অস্ত্রোপচার শেষে বাঁ দিকের কিডনি বের করে নেন। অস্ত্রোপচার শেষে খছরু মিয়ার জ্ঞান ফিরলে তিনি বাঁ হাতের পাশাপাশি বাঁ দিকের কিডনির পাশে অস্ত্রোপচারের চিহ্ন দেখতে পান। এ সময় খছরু মিয়ার স্বজনেরা বিষয়টি জানতে চাইলে চিকিৎসকেরা কোনো সদুত্তর না দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলেন। পরে হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনিসহ চিকিৎসকেরা জানান, কিডনি থেকে একটি শিরা নিয়ে বাঁ হাতে সংযুক্ত করা হয়েছে। পরে তড়িঘড়ি করে অস্ত্রোপচারের এক দিন পর হাসপাতাল থেকে তার ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফেরার পর শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন খছরু মিয়া। ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারছিলেন না। প্রস্রাব ও মলত্যাগে মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়। অসুস্থতার ব্যাপারে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে বিস্তারিত জানালে তারা চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করতেন। পরে ১৫ জানুয়ারি বেসরকারি একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম করে নিশ্চিত হন, তার বাঁ দিকের কিডনি নেই। আর্থিক সুবিধার জন্য চিকিৎসকেরা তার কিডনি অপসারণ করে নিতে পারেন বলে অভিযোগে খছরু মিয়া উল্লেখ করেন।

ওসমানী হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, আমি দায়িত্ব পেয়েছি বেশি দিন হয়নি। আদালতের এমন কোনো নির্দেশনা বা অভিযোগের ব্যাপারে অবগত নই।

বিষয়টি তিনি খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন বলে জানান।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...