হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার পর গৃহকর্তার আত্মহত্যা

সিলেট অফিস,

  • প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৩, ৭:৩৭ অপরাহ্ণ

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের গাদিশাইল গ্রামে স্ত্রী ও ১০ বছরের ছেলেকে শ্বাসরোধে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সুর্যল হক(৪০) নামে এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার সন্ধা সাড়ে ৬টায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করেন । ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার( ২৩ মার্চ) সকালে কোন একসময় উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের গাদিশাইল গ্রামে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গাদিশাইল গ্রামের আব্দুল হকের পুত্র সুর্যল হক(৪০) প্রায় ১৩ বছর আগে হবিগঞ্জের সদর উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের জেসমিন আক্তার (৩৫) কে বিয়ে করে। বিয়ের পর তার কোলেজুড়ে ৪ সন্তান জন্মগ্রহণ করে। তারা হলেন: ইয়াছিন (১০), জিহান মিয়া (৭) শিরিন (৪), আইরিন (২) । এর মধ্যে বড় ছেলে প্রতীবন্ধী। অভাবের সংসার, তাই বড় ছেলে ইয়াছিনকে নিয়ে তার মা জেসমীন আক্তার ভিক্ষাবৃত্তি করতেন। আর পিতা বাড়িতেই ব্যাথের কাজ করতেন। এ অবস্থায় তারা খুবই কষ্টে জীবন-যাপন করতেন। ফলে তাদের সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। এ নিয়ে উভয়ের মাঝে দাম্পত্য কলহ চলত প্রায়ই। জেসমিন আক্তার মাঝেমধ্যে ভিক্ষা করে চলতেন আর কখনো তার পিতার কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে সংসার চালাতেন। স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, সুর্যল হক প্রায় সময় গাঁজা সেবন করে মাতলামি করতেন এবং তার স্ত্রীকে মারপিটও করতেন। ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার উভয়ের মধ্যে পুনরায় বাকবিতন্ডা হয়। এর আগেও সুর্যল হক একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, অভাবের তাড়নায় পারিবারিক কলহের জের ধরে বৃহস্পতিবার কোন একসময় স্ত্রী জেসমিন আক্তার ও শিশু ইয়াসিনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে নিজেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন সুর্যল হক। ভাগ্যক্রমে শিশু আইরিন তার কবল থেকে বেছে যায়, তাকে হত্যার চেষ্টা করে পিতা। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্কর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শামছুল হক , মাধবপুর সার্কেল নির্মলেন্দু চক্রবর্তী। চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: রাশেদুল হক, ইন্সপেক্টর তদন্ত গোলাম মোস্তফা। পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, অভাবের তাড়নায় প্রায় সময় স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকত, ধারণা করা হচ্ছে ঘটনার দিন উভয়ের মধ্যে পুনরায় বাকবিতন্ডা হয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। তারপরও এবিষয়ে তদারকি চলছে এবং লাশ তিনটি উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ছাড়াও পিবিআই র‍্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...