চিনিতে নৈরাজ্য, লেবু-শসা ও বেগুনের দাম চড়া

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২৩, ২:৫১ অপরাহ্ণ

রমজানে যেসব পণ্যের চাহিদা সবচেয়ে বেশি সেসব পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়লো রাজধানীর বাজারে। এখনও নৈরাজ্য চলছে চিনির দরে। খেজুরের দামও গেলো বছরের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ের বাড়তি চাহিদার প্রায় সব পণ্যের দামই এখন বেশ চড়া। পুরো মাস এই বেসামাল বাজার পরিস্থিতি কিভাবে সামলাবে, সে আশঙ্কায় অস্বস্তিতে ভোক্তারা।

শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। দেড়-দুই মাস আগ থেকে অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। বিশেষ করে মুরগি, মাংস, ডিম, সবজি, চিনি এবং বিভিন্ন মসলার দাম বেড়ে গেছে। বাজারের এই অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সরকারের নানা উদ্যোগ ও তোড়জোড় থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন। শুক্রবার ভোগ্যপণ্যের বাজারে প্রায় সব কিছুর দাম ছিল আকাশ ছোঁয়া।

এদিন সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, রমজানে বিশেষ চাহিদার পণ্যগুলোর মজুদে কোনো ঘাটতি না থাকলেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় উৎপাদন, আমদানি ও মজুদ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে বাণিজ্যমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রী বলেছিলেন, রমজানে যেসব পণ্যের বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়, সেগুলোর মজুদ পরিস্থিতিতে কোনো সংকট নেই। সরবরাহ চেইনও স্বাভাবিক রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। এর পরও বেশির ভাগ ভোগ্য পণ্যের দাম সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী ও গুলশান উত্তর ডিএনসিসি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ইফতারির মুখরোচক খাবার বেগুনির উপাদান বেগুনের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শসার দামও দ্বিগুণ বেড়ে দেশি শসা ৯০ থেকে ১০০ টাকা এবং হাইব্রিড শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শরবত তৈরির প্রধান উপকরণ লেবুর দামও বেড়ে রেকর্ড ছুঁয়েছে। বড় লেবু ১০০ টাকা, মাঝারি ৭০ থেকে ৮০ টাকা এবং ছোট লেবু ৫০ থেকে ৬০ টাকা হালি। গাজর ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, টমেটো ৬০ টাকা ও কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা।

গত সপ্তাহে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি ছোলা বিক্রি হলেও শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি। খোলা চিনি ১২০ টাকা কেজি। চিনির দাম কমাতে আমদানি শুল্ক কমালেও এর কোনো প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে।

রোজা শুরু হওয়ার দুই মাস আগ থেকে বাড়তে থাকে বিভিন্ন মুরগির দাম। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে দাম বেড়ে তিন দিন ধরে ব্রয়লার মুরগি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩৭০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস কেজিতে ৫০ থেকে ৮০ টাকা বেড়ে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজার ঘুরে আরও দেখা গেছে, নতুন করে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দামও বেড়ে গেছে। পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুন কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং দেশি আদা কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। চীন থেকে আমদানি করা আদা ২৮০ টাকা কেজি। বড় আলুর দামও কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে এখন ২৫ টাকা।

এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ-রসুনের খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘দু-তিন দিন ধরে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তি। খুচরা বাজারে মানভেদে পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি, যা আগে বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। দেশি রসুন প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকা, যা আগে ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। দেশি আদা ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি, যা দু-তিন দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকায়। চীনা আদা ২৮০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ২৫০ টাকা।’

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...