সব
স্বদেশ বিদেশ ডট কম
ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার পর ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক কলেজছাত্রী। তার নাম মাশফি সুমাইয়া(১৯)। তিনি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার ষাইটকাহন গ্রামের শামীম আহমেদের মেয়ে। সুমাইয়া কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের গণিত বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শনিবার সকাল ৭টার দিকে নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেন তিনি।
পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শ্যামল মিয়া ওই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, লাশ উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কিশোরগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সুমাইয়া ২০১৭ সালে কালিয়াচাপড়া চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে। ওই স্কুলে পড়াশোনার সময়ে রাসেল আহমেদ নামের এক শিক্ষকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সুমাইয়া। রাসেল আহমেদ ওই স্কুলের গণিত বিষয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাদ গ্রামের রহমত আলীর ছেলে। বর্তমানে রাসেল আহমেদ ঢাকার একটি কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত।
এদিকে প্রেমিক-প্রেমিকা পৃথক স্থানে থাকলেও তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ঠিকই ছিল। তিন বছর ধরে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুমাইয়াকে ধর্ষণ করে আসছিলেন প্রেমিক রাসেল। কিছুদিন আগে রাসেল গোপনে অন্য মেয়েকে বিয়ে করেন। এমন খবর পেয়ে অভিমানে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন প্রেমিকা সুমাইয়া।
মৃত্যুর আগে সুমাইয়া ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিন বছর ধরে ছাত্রীকে ধর্ষণের পরে অন্য মেয়েকে বিয়ে করে ছাত্রীকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা আমার প্রিয় শিক্ষক। আর সেই ভাগ্যবান ছাত্রী আমি নিজে। আল্লাহ আমায় মাফ করো। দেশে এমন শিক্ষক আর কোনো ছাত্রীর জীবনে না আসুক। সবাই আমায় মাফ করবেন, সদ্য এসএসসি পাস করা একটা মেয়ে বিয়ের মানে এসব জানতামই না। ভদ্র স্যারকে বিশ্বাস করতাম, যা বলতো তাই শোনতাম। যাই হোক, ভাল থাক সে….বিদায়’।
পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.শ্যামল মিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ওই কলেজ ছাত্রী আত্মহত্যা করেন। ফেসবুকের পোস্টটি তার এক আত্মীয়ের নজরে পরার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রীর পরিবারকে জানানো হয়। পরে পরিবারের লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে ঘরের ভিতরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সুমাইয়াকে দেখতে পান।
এদিকে বিকেল ৪টার দিকে এলাকাবাসীর ব্যানারে উপজেলার পুলেরঘাট বাজারে অভিযুক্ত রাসেল আহমেদকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। মানববন্ধনে অভিযুক্ত রাসেল আহমেদকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
Developed by: Helpline : +88 01712 88 65 03