আওয়ামী লীগের কমিটিতে থাকবে শুদ্ধি অভিযানের প্রভাব

আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দলের উপ-কমিটি, জেলা, মহানগর এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে সুপারিশকৃত কমিটি অনুমোদনের ক্ষেত্রে দলটি কর্তৃক পরিচালিত শুদ্ধি অভিযানের প্রভাব থাকবে। দলের দপ্তরে জমা দেয়া সুপারিশকৃত কমিটি চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ এবং যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেয়া হবে। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে বাদ দেয়া হবে।

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, খুব শিগগিরই দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি অনুমোদন দেয়া হবে। সেখানে ত্যাগী, পোড় খাওয়া নেতাকর্মীদের মূল্যায়নের পাশাপাশি বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্তদের বাদ দেয়া হবে। দলের ভাবমূর্তি সাধারণ মানুষের কাছে আরো উজ্জ্বল করতে এরই মধ্যে শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর বেশ কয়েকজন নেতা জানান, সরকারের বিভিন্ন চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দেশের জনগণ বেশ খুশি। দলমত নির্বিশেষে সরকারের উন্নয়ন স্বীকার করছে। অল্প কিছু মানুষের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্জনে কালিমা লেপন হচ্ছে। যাদের কারণে দলের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের নাম যদি সুপারিশকৃত কমিটিতে থেকে থাকে, তাহলে সেখান থেকে বাদ দেয়া হবে।

গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে অবৈধ ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযানের মাধ্যমে শুরু হয় শুদ্ধি অভিযান। আওয়ামী লীগের যারা যারা অপরাধে জড়িত, তাদের শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হয় এবং সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরই মধ্যে দলটি অনুধাবন করেছে অনুপ্রবেশকারীদের ভিড়ে পেছনে পড়ে যাচ্ছেন দলের ত্যাগী ও পোড় খাওয়া নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় যারা অত্যাচারিত হয়েছেন বা রাজনৈতিকভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন তাদের সামনে নিয়ে মূলায়িত করতে চায় দলটি।

আওয়ামী লীগের একজন সংগঠনিক সম্পাদক একটি বিভাগের দায়িত্বে আছেন, একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দুটি বিভাগের দায়িত্বে আছেন, একজন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য দুটি বিভাগের বিশেষ দায়িত্বে আছেন। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা অবশ্যই কমিটি করার সময়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করবেন এবং সতর্ক থাকবেন যেন কমিটিতে ত্যাগী, পোড় খাওয়া নেতারা যেন পতদবঞ্চিত না হয়। তারা পদবঞ্চিত হলে যিনি ওই জেলা বা বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন তাকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।

আসন্ন কমিটিগুলোর অনুমোদন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমরা চাইবো কোনো ত্যাগী নেতাকর্মীর প্রতি যেন অবহেলা করা না হয়। এখন যারা অনুপ্রবেশকারী তাদের অর্থনৈতিক শক্তি, মানসিক শক্তি একটু বেশি থাকে। তাদের সঙ্গে আমাদের পোড় খাওয়া নেতারা পেরে ওঠে না। তারা ধাক্কায় পেছনে পড়ে যায়। এই কারণে আমরা সতর্ক রয়েছি। আমাদের নেত্রীও এ ব্যাপারে খুবই হার্ড লাইনে আছেন।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল বলেন, পরীক্ষিত, সৎ, কমিটেড, যাদের ব্যাকগ্রাউন্ড মুজিব আদর্শের, আমাদের নেত্রী শেখ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যাদের আস্থা আছে তারাই কমিটিতে স্থান পাবেন। যারা সমাজে নিন্দিত, দুষ্টচক্র বা যাদের কারণে দল বিব্রত হতে পারে তারা আওয়ামী লীগের কমিটিতে আসতে পারবে না বলে আমরা আশাবাদি।

[১] [২] [৩]