জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশনের উপর উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক,

  • প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ৯:৪১ পূর্বাহ্ণ

আজ (১১ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনের সভাপতি তিজানি মোহাম্মদ-বান্দে এর আহবানে ও সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হল বাংলাদেশের ফ্লাগশীপ রেজুলেশন “শান্তির সংস্কৃতি” এর উপর সাধারণ পরিষদের বার্ষিক উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম।

কোভিড-১৯ জনিত কারণে ভার্চুয়ালভাবে অনুষ্ঠিত এ ফোরামে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ, সদস্য দেশসম‚হের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রাষ্ট্রদ‚ত এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিবর্গ বক্তব্য রাখেন। ইভেন্টটির এবারের থিম নির্ধারণ করা হয়েছে -“শান্তির সংস্কৃতি: কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে নতুন বিশ্ব বিনির্মান।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটি উপস্থাপন এবং সর্বসম্মতিক্রমে তা রেজুলেশন হিসেবে গৃহীত হওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা প্রদত্ত বক্তব্যে তুলে ধরেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদ‚ত রাবাব ফাতিমা। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ১৯৭৪ সালে প্রথমবারের মতো জাতির পিতা প্রদত্ত ভাষণের অংশ বিশেষ -“মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি একান্ত দরকার। এই শান্তির মধ্যে সারা বিশ্বের সকল নর-নারীর গভীর আশা আকাঙ্ক্ষা ম‚র্ত হয়ে রয়েছে” -অংশটি উদৃত্ত করেন তিনি। রাষ্ট্রদ‚ত ফাতিমা আরও বলেন, জাতির পিতার এই কালজয়ী বক্তব্য ও আদর্শ থেকেই উদ্ভ‚ত হয়েছে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অবিচল প্রতিশ্রুতি যা আমাদেরকে শান্তির সংস্কৃতির প্রসারে অনুপ্রাণিত করছে।

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে বিশেষ করে মহামারিকালে শান্তির সংস্কৃতির প্রাসঙ্গিকতার কথাও তুলে ধরেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি বলেন, এই মহামারির সময়েও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের অনেক উদ্যোগে ছিল শান্তির সংস্কৃতির অনুরণন। এই মহামারি কাটিয়ে তুলতে বৈশ্বিক একাত্মতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টায় পরিপ‚রক হিসেবে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটিকে সন্নিবেশন করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন রাষ্ট্রদ‚ত ফাতিমা।

পরে, যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা থিংক ট্যাঙ্ক ইন্টারন্যাশনাল পিস ইনস্টিটিউট (আইপিআই) আয়োজিত “শিক্ষা, কোভিড -১৯ এবং শান্তির সংস্কৃতি” শীর্ষক একটি সাইড ইভেন্টে প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশ নেন তিনি। এই ইভেন্টটিতেও বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি তিজানি মোহাম্মদ-বান্দে। সাইড ইভেন্টটির বক্তব্যে শিশুদের উপর বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কোভিড-১৯ এর মারাত্মক প্রভাব সমন্ধে আলোকপাত করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। মহামারিটি যাতে প্রজন্মের সঙ্কটে পরিণত না হয় সে বিষয়ে সতর্কতার উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদ‚ত ফাতিমা। করোনা মহামরিতে শিক্ষাখাতে সৃষ্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় মোকাবিলায় শান্তির সংস্কৃতি অনুসরণের আহবান জানান তিনি। মহামারি চলাকালীন শিক্ষা ও বিদ্যার্জনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রচেষ্টার কথাও তুলে ধরেন রাষ্ট্রদ‚ত ফাতিমা। অনুষ্ঠানটির অন্যান্য প্যানেলিস্টগণের মধ্যে ছিলেন ইউনিসেফ এবং ইউনেস্কোর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ। এছাড়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রাষ্ট্রদ‚ত, শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবর্গ ইভেন্টটিতে অংশগ্রহণ করেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...