নিউইয়র্কে গাড়ী চাপায় এক বাংলাদেশীর মৃত্যু

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ২ অক্টোবর ২০২০, ২:০৮ অপরাহ্ণ

নিউইয়র্কে গাড়ী চাপায় বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত সায়েম শাহরীয়ার অন্তু (২৪)-এর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মা-বাবার সাথে বাজার করে বাসায় ফেরার পথে গাড়ী ড্রাইভ করতে না দেয়ায় অভিমান করে মহাসড়কে হেটেই রওনা দেয় অজানার উদ্দেশ্যে। ফলে আকস্মিকভাবে গাড়ী চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজেউন)। ঘটনটি ঘটে গত মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর)। অন্তুর অকাল ও মর্মান্তিক মৃত্যুতে কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসছে। খবর ইউএনএ’র।

জানা যায়, নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডস্থ লেক রনকনকোমা’য় বসবাসকারী ইকবাল ইসলাম ও ইসরাত কুমু দম্পতির পুত্র সায়েম শাহরীয়ার অন্তু। এই দম্পতির আরো তাসফিয়া রুবাইয়াত কৌশি নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তাদের দেশের বাড়ী নোয়াখালী কোম্পনীগঞ্জ। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় অন্তু মা-বাবার সাথে বাজার করতে যায়। বাজার শেষে বাসায় ফেরার পথে অন্তু গাড়ী ড্রাইভ করতে চায়। কিন্তু মা-বাবা তাকে তখন ড্রাইভ করতে বারণ করলে সে, রাগে-ক্ষোভে-অভিমানে মা-বাবার চোখের পলকে চলে যায় এবং লং আইল্যান্ড এক্সপ্রেসওয়ের (মহাসড়ক) ৪১ এক্সিটের কাছে এইচওভি লেনের উপর দিয়ে হাঁটা শুরু করে। ফলে দ্রুতগাড়ী একটি গাড়ী তাকে আঘাত করে এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। রাত ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর পরই হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সায়েম শাহরীয়ার অন্তু’র মরদেহ উদ্ধার করলেও ঘাতক গাড়ীটি আটক করতে পারেনি। পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় এবং বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) সকালে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের কথা। শুক্রবার তার নামাজে জানাজা শেষে তার মরদেহ লং আইল্যান্ডস্থ ওয়াশিংটন মেমোরিয়াল মুসলিম কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

আমেরিকায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা হলেও বাংলা সংস্কৃতির সাথে ছিলো তার নিবিড় যোগাযোগ। শিল্প-সংস্কৃতির প্রতিটি শাখায় ছিলো তার সরব পদচারণা। দেশ ও প্রবাসের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় তার কৃতিত্বের কথা তুলে ধরা হতো। মানবদরদী অন্তু ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের বিভিন্নভাবে সেবা দিয়ে আসছিলো। নিয়মিত নিজে রক্তও দান করতেন। অন্তু সম্প্রতি গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি আইটি কর্পোরেট জবে (চাকুরি) যোগদান করেছিলো। অক্টোবর মাসে সেখানে তার ফাইনাইলি যোগ দেয়ার কথা ছিলো। টেক প্রফেশনাল অন্তু ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী।

ইকবাল ইসলাম বুধবার জানান, মহামারী করোনাভাইরাস পরিস্থিতে গত জানয়ারী মাসে অন্তু চাকুরী হারালে অনেকটা হতাশা হয়ে পড়ে এবং নতুন চাকরী খুঁজতে থাকে। অনেক সময় তাকে মানসিক অশান্তিতে সময় কাটতে দেখা যায়। এজন্য তার চিকিৎসাও চলছিলো। সম্প্রতি অন্তু ক্যালিফের্নিয়াতে একটি আইটি কোম্পানীতে চাকুরী পায় এবং অক্টোবর মাসের ৫ তারিখে তার নতুন চাকুরীতে অরিয়েন্টেশন শুরুর কথা ছিলো। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতেই আমার ছেলেকে কেড়ে নিলো। তিনি তার সন্তানের জন্য সবার দোয়া কামনা এবং তার মৃত্যুতে যারা শোক ও সমবেদনা প্রকাশকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...