এশিয়ার যেসব দেশ ট্রাম্পের জয় চায়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক,

  • প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০২০, ৪:৫৫ অপরাহ্ণ

বিভিন্ন কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন খুব একটা নেই। কিন্তু এশিয়ার কয়েকটি অঞ্চল ও দেশের মানুষ মনেপ্রাণে ট্রাম্পের জয় চাইছেন। খবর বিবিসির।

‘আমেরিকা প্রথম নীতি’প্যারিস জলবায়ু ও ইরান পরমাণু চুক্তির মত আন্তর্জাতিক চুক্তি প্রত্যাহার, অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি, জাতিসংঘের নানা সংস্থার তহবিল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি, উদ্ভট বক্তব্য ও আচরণ ইত্যাদি কারণে পুরো মেয়াদ জুড়েই বেশিরভাগ সময় নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হয়ে সমালোচিত হয়েছেন ট্রাম্প।

কিন্তু তাই বলে দেশের বাইরে ট্রাম্পের ভক্ত-সমর্থকের সংখ্যা নেহাত কম নয়। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ওইসব অঞ্চল যাদের চীনের সঙ্গে শত্রুতা আছে এবং বাহুবলে দেশটিকে মোকাবেলা করতে অক্ষম। তাদের কাছে ট্রাম্প সবচেয়ে বড় আশার নাম। তাই তারা মনে প্রাণে চাইছে আগামী ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্প বিজয়ী হন।

এশিয়ার সবচেয়ে বড় বাণিজ্য নগরী হংকং। চীনের অংশ হলেও হংকং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। হংকংয়ের বেলায় চীন ‘এক দেশ দুই নীতি’ মেনে চলে। কিন্তু গত কয়েক বছরে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি হংকংয়ের উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আরো জোরদার করতে চাইছে। অন্যদিকে হংকংয়ের বাসিন্দারা চীনের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হয়ে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন চায়। এ দাবিতে গত কয়েক বছর ধরে হংকংয়ে আন্দোলন চলছে।

হংকংয়ের উপর চীনের জোরজবরদস্তির বিরুদ্ধে বরাবরই উচ্চকণ্ঠ থেকেছেন ট্রাম্প। তাই ট্রাম্পের জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে হংকং।

চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা দিন দিন বাড়ছে। ১৯৪০ সালের গৃহযুদ্ধে চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হয় তাইওয়ান। তারা নিজেদের আলাদা রাষ্ট্র দাবি করলেও চীন স্বীকৃতি দেয়নি। বেইজিং তাইওয়ানকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অংশ মনে করে; যেটি একদিন আবার একত্রিত হবে, প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে।

যুক্তরাষ্ট্রও অবশ্য নীতগত কারণে দেশ হিসেবে তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু ওয়াশিংটন বিশেষ করে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তাইওয়ানের ঘনিষ্ঠতা উল্লেখ করার মত। তাইওয়ান সব সময় যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের বড় মিত্র মানে। তাই ট্রাম্পের জয় চায় তাইওয়ানও।

গত ৫০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন উভয়ই ভিয়েতনামের মাটিতে যুদ্ধ করেছে। অবশ্য দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটি এতদিনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের যুদ্ধের স্মৃতি হয়তো ভুলতে বসেছে। কিন্তু চীন এখনো তাদের জন্য ‘হুমকি’ হয়ে আছে। ফলে চীনকে মোকাবেলায় ট্রাম্পের জয় চায় ভিয়েতনাম।

যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই জাপানকে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ অংশিদার এবং মিত্র বলে বিবেচনা করে। কিন্তু ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর তার ‘আমেরিকা প্রথম নীতি’ কারণে অনেকেই টোকিও-ওয়াশিংটন সম্পর্ক নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন।

ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই একটি বহুপাক্ষিক ট্রান্স-প্যাসিফিক বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করে ওই দুঃশ্চিন্তা আরো বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। এমনকি তিনি ওই অঞ্চলে অবস্থিত মার্কিন সেনাদের জন্য জাপানকে আরো ব্যয় বাড়তে বাধ্য করেন। তবুও চীনকে আটকাতে ট্রাম্পের জয় চায় জাপান।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...