পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের খলিফাপুরের পঞ্চমী বেওয়া। ছয় মেয়ে আর দুই ছেলের মা ছিলেন। ছয় মেয়েরেই বিয়ে হয়েছে অনেক আগে। মায়ের জন্য অন্তঃপ্রাণ ছিলেন তারা। একটু অসুখ-বিসুখেই মাকে দেখার জন্য ছটফট করতেন।
বেশ কয়েক বছর ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন নব্বই বছর বয়সী পঞ্চমী বেওয়া। এর মধ্যে মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) হঠাৎ করেই মৃত্যু হয় তার। মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে মাকে শেষবারের মতো দেখতে ছয় মেয়ে ছুটে আসেন।
মেয়েদের মধ্যে সবার ছোট চৈতী রানী ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ফারাবাড়ি এলাকার পলাশ চন্দ্র রায়ের স্ত্রী আর সবার বড় স্বরজনি বালা একই উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার সুশীল চন্দ্র রায়ের স্ত্রীও আসেন মায়ের লাশ দেখতে।
মেয়েরা দিনভর মায়ের জন্য কান্নাকাটি আর আহাজারি করেন। বিকেলে পঞ্চমীর লাশ বাড়ির পাশের শ্মশানে সৎকার করা হয়। তবে বিপত্তি ঘটে এর মধ্যেই। স্বামীর বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করে অচেতন হয়ে পড়েন চৈতী রানী।
এ সময় চৈতী রানীকে মাইক্রোবাসে তুলে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় বড় মেয়ে স্বরজনি বালাও ছোট বোনের সঙ্গে। তবে পথিমধ্যে স্বরজনি বালাও অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে নেওয়ার পথে সন্ধ্যা সাতটার দিকে মাইক্রোবাসেই মারা যান দুই বোন। মায়ের লাশের সৎকার করতে না করতেই দুই মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।