ভাঙনের কবলে হেফাজত

নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের লক্ষ্যে আগামী রোববার হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে যাচ্ছে হেফাজতে ইসলামের কাউন্সিল। ধর্মভিত্তিক এ সংগঠনটির কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে পক্ষে-বিপক্ষে একাধিক গ্রুপ তৈরি হয়েছে। ফলে সংগঠনটির ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে প্রয়াত আমির আহমদ শফীর নেতৃত্বাধীন অবিভক্ত হেফাজতে ইসলাম ভাঙনের কবলে পড়তে যাচ্ছে।

হেফাজতে ইসলামের আসন্ন কাউন্সিলে দাওয়াত পাননি বলে অভিযোগ করেছেন প্রয়াত আমির আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানিসহ অনুসারীরা। কাউন্সিলের বৈধতা নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলেছেন।

এ প্রসঙ্গে হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাঈনুদ্দিন রুহী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যিনি (মহিবুল্লাহ বাবুনগরী) কাউন্সিল আহ্বান করেছেন, তিনি হেফাজতের কেউ নন। তিনি তো হেফাজত থেকে পদত্যাগ করেছেন। হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির শাহ আহমদ শফীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন, এমনকি হেফাজতের বিরুদ্ধেও বক্তব্য দিয়েছেন। এই কাউন্সিলের কোনো বৈধতা নেই। একটা পকেট কমিটি হবে। হেফাজতে ইসলামের যে ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম তা বিনষ্ট হয়ে যাবে। একটা গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এই কাউন্সিল করা হচ্ছে।’

প্রয়াত আমির আহমদ শফীর অনুসারী এবং চরমোনাইর পীরের অনুসারীদের বাদ দিয়ে কাউন্সিলে দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে মাঈনুদ্দীন বলেন, ‘আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি ১৫১ জনের। তারা বাকি লোক কোথায় পেলেন? তাদের খাতিরের লোকজনকে দাওয়াত দিয়েছে। বলা হচ্ছে, দেশের শীর্ষ আলেমদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের শীর্ষ আলেমরাই তো দাওয়াত পাননি। যে ছয়জন কাউন্সিল আয়োজনের কাজ করছেন বলে জেনেছি তাদের মধ্যে চারজন চট্টগ্রাম মহানগর বা উত্তর, দক্ষিণের কেউ না। তাই তাদের অনুসারীরাই আমন্ত্রণ পাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নেতৃত্ব নির্বাচনে আমাদের কোনো ভোটের পদ্ধতি নেই। সবার মতামত নিয়ে তারপর শুরা সিদ্ধান্ত নেবেন। কোনো পদে কেউ প্রার্থী নেই। শুরাই আলোচনা করে ঠিক করবে, কে কোন পদ পাবেন।’

আহমদ শফীর অনুসারী মাঈনুদ্দীন রুহী অভিযোগ করে বলেন, ‘শুনেছি তারা নূর হোসাইন কাসেমীকে মহাসচিব করতে চান। আর জুনাইদ বাবুনগরী নিজেই আমির হতে চান। নায়েবে আমির যদি নিজেই মহাসচিব হন, তাহলে সংগঠনের চেইন অব কমান্ড তো থাকবে না। নূর হোসাইন কাসেমী ২০ দলীয় জোটের এক দলের নেতা। হেফাজতের গঠনতন্ত্রে আছে, দলীয় কেউ মহাসচিব হতে পারবে না।’

হেফাজত সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকাল ১০টায় হাটহাজারী মাদ্রাসায় সম্মেলন শুরু হবে। প্রতিনিধি সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন নাজিরহাট আল জামিয়া আল আরাবিয়া নছিরুল ইসলাম মাদ্রাসার শুরা সদস্য ও ফটিকছড়ি বাবুনগর মাদ্রাসার মুহতামিম মহিবুল্লাহ বাবুনগরী। সম্মেলনের পর নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন জ্যেষ্ঠ আলেমদের ১৫ জনের শুরা কমিটি। এতে হেফাজতে ইসলামের আমীর ও মহাসচিব নির্ধারণ করা হবে।

হেফাজতে ইসলামের আসন্ন কাউিন্সিল প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতিনিধি সম্মেলন আহ্বান করা হয়েছে। নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণ করা হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দসহ জেলা নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। প্রায় পাঁচশ জনকে দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে।

[১] [২] [৩]