নতুন রাষ্ট্রদূত শামীম আহসানকে অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত ইতালি প্রবাসীরা

মাঈনুল ইসলাম নাসিম,

  • প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০২০, ৬:৫২ অপরাহ্ণ

ইতালিতে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে অবশেষে ২০ নভেম্বর শুক্রবার। পেশাদার কূটনীতিক মো. শামীম আহসানকে এদিন দুপুরে বরণ করে নেয়া হবে সাত পাহাড়ের মহানগর রোমের লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি বিমানবন্দরে। এক যুগের ব্যবধানে সাগর পাড়ে রোমে তাঁর পুরনো কর্মস্থলে ফিরছেন তিনি, রাষ্ট্রদূত হিসেবে। সর্বশেষ নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজাতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। চুক্তিভিত্তিক রাষ্ট্রদূত হিসেবে অতি সম্প্রতি বিদায় নেয়া আবদুস সোবহান সিকদারের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মো. শামীম আহসান।

ইতালির বাংলাদেশ কমিউনিটিতে আগে থেকেই অভাবনীয় জনপ্রিয় ও বিশেষ আস্থাভাজন ব্যক্তিত্ব মো. শামীম আহসান ২০০৪ থেকে ২০০৮ রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসে কাউন্সিলর/মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অত্যন্ত দক্ষতার সাথে। উত্তরে আল্পস পর্বতমালা থেকে দক্ষিণে সিসিলি দ্বীপ এবং পূর্বে আড্রিয়াটিকের কোল ঘেঁষে পশ্চিমে ভূমধ্যসাগরীয় তীরবর্তী বাংলাদেশি অধ্যুষিত প্রতিটি শহরে নগরে বন্দরে মো. শামীম আহসানের সুনাম সর্বজনবিদিত।

২০০৮ থেকে ২০১১ আটলান্টিকের ওপাড়ে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার ও ডেপুটি চিফ অব মিশন ছিলেন মো. শামীম আহসান। নাইজেরিয়াতে হাইকমিশনার হিসেবে যোগ দেয়ার আগে ২০১৪ থেকে ২০১৮ নিউইয়র্কে কনসাল জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কমিউনিটি তাঁকে স্মরণ করে শ্রদ্ধাভরে। ইতালির প্রতিটি সিটির মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি অধ্যুষিত অধিকাংশ শহরে স্থানীয় কমিউনিটিতে মো. শামীম আহসানের অভাব অনুভূত হয়েছে বছরের পর বছর।

ক্লিন ইমেজের ডিপ্লোমেট মো. শামীম আহসান তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে কুয়েত ও কাতারের বাংলাদেশ মিশনে নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি ঢাকাস্থ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একাধিক পদে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। প্রখর মেধাবী এই মানুষটি তাঁর শিক্ষাজীবনে কোনদিন ফার্স্ট ক্লাস সেকেন্ড হননি। যশোর শিক্ষাবোর্ড থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় ফার্স্ট স্ট্যান্ড করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পলিটিকাল সায়েন্সে অনার্স ও মাস্টার্স উভয় ক্ষেত্রেই ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হবার গৌরবের ধারাবাহিকতায় মহামান্য রাষ্ট্রপতির চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন তিনি।

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে যেসব বিদেশি নাগরিক ও সংগঠনের অসামান্য অবদান ছিলো তাঁদের নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঐতিহাসিক প্রকাশনা ছাড়াও রাষ্ট্রীয় বহু গুরুত্বপূর্ণ পাবলিকেশনে বিশেষ ভূমিকা রাখেন মো. শামীম আহসান। তুখোড় এই কূটনীতিকের লেখা দু’টি বই ‘কূটনীতিকোষ’ এবং ‘আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি : সমস্যা ও সম্ভাবনা’। বিদেশ বিভুঁইয়ে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করা তাঁর আজীবনের ধ্যান জ্ঞান সাধনা। ব্যক্তিগত জীবনে সাদামাটা মানুষ মো. শামীম আহসানের সহযাত্রী স্ত্রী প্যান্ডোরা চৌধুরি এবং একমাত্র কন্যা।

ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিরা আশা করছেন, নতুন রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান তাঁর ক্যারিশমাটিক কোয়ালিটি এবং ডায়নামিক ক্যাপাসিটি কাজে লাগিয়ে রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসকে সযত্নে ঢেলে সাজাবেন। সেই সাথে দূতাবাস যাতে সত্যিকার অর্থেই প্রবাসীদের ন্যায্য সার্ভিস যথাসময়ে সঠিকভাবে দিতে পারে, হাজারো প্রবাসীর চরম ভোগান্তির যাতে যবনিকাপাত ঘটে, তা তিনি নিশ্চিত করবেন। ইতালি-বাংলাদেশ ঝিমিয়ে পড়া কূটনৈতিক সম্পর্কের ইতি টেনে সুদিন ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে নবদিগন্তের সূচনা হবে, সময়ের প্রয়োজনে এটাও সবার প্রত্যাশা।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...