আবারও ইউটার্ন ট্রাম্পের, ‘কখনও হার মানব না’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক,

  • প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২০, ১২:৩১ অপরাহ্ণ

মার্কিন নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর অনেকটা টালমাটাল ডোনাল্ড ট্রাম্প। একবার পরাজয় মেনে নেয়ার ইঙ্গিত দিয়ে পরক্ষণেই তার উল্টো টুইট করছেন। এই ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলছে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে। সবশেষ টুইটে আবারও ইউটার্ন নিলেন ট্রাম্প। কখনও পরাজয় মানবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। অথচ এর কয়েক ঘণ্টা আগে টুইটে ট্রাম্প হার মেনে নেয়ার ইঙ্গিত দেন।

স্থানীয় সময় সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনকে প্রস্তুতি শুরু করার চিঠি দিয়েছে। এ চিঠি দেয়ার কিছুক্ষণ পরই ডোনাল্ড ট্রাম্প জিএসএপ্রধান এমিলি মারফিকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট করেন।

এতে বিষয়টি পরিষ্কার হয় যে, ট্রাম্প নমনীয় হয়েছেন। তিনি ক্ষমতা হস্তান্তরের পথে হাঁটছেন।

এর মাত্র পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে সোমবার মধ্যরাতে দেয়া আরেক টুইটবার্তায় ট্রাম্প লেখেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্নীতির নির্বাচনে তিনি কখনও পরাজয় মেনে নেবেন না। ভুয়া ব্যালটের কাছে তিনি কখনও পরাজয় মেনে নেবেন না।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে আরেক টুইটবার্তায় ট্রাম্প বলেন, মনে রাখবেন– জিএসএ দুর্দান্ত এবং এমিলি মারফি দারুণ কাজ করেছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন, সেটি জিএসএ ঠিক করে দেয় না।

মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ট্রাম্পের বারবার এ অবস্থান বদলকে তার চারিত্রিক দৃঢ়তার দুর্বলতা হিসেবেই দেখছেন। তারা বলছেন, অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, ভোট কারচুপির অভিযোগ নিম্ন আদালতে খারিজ হওয়ার পর এখন ডোনাল্ড ট্রাম্প সুপ্রিমকোর্টের দিকে তাকিয়ে আছেন।

এর আগেও ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিক টুইটে একবার নির্বাচনে ভরাডুবি মেনে নেয়ার ইঙ্গিত দেন। পরক্ষণেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলেন।

গত ১৪ নভম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের জয় স্বীকার করে নিয়ে পরক্ষণেই সুর পাল্টান ডোনাল্ড ট্রাম্প।

পরদিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্থানীয় সময় রোববার সকালে বাইডেনের নাম উল্লেখ না করে এক টুইটে লেখেন– ভোট জালিয়াতির কারণে তিনি নির্বাচনে জিতেছেন। নির্বাচনী পর্যবেক্ষণকারী কোনো ব্যক্তি বা সংস্থাকে ভোট গণনায় যেতে দেয়া হয়নি। চরম বামপন্থী মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃত্ববাদী কায়দায় ভোট গণনার কাজ তদারকি করেছে। এদের দুর্নাম রয়েছে, এসব কাজ করার জন্য তারা মোটেও উপযুক্ত নন। তারা টেক্সাসে কাজ পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হননি (যেখানে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছি), ভুয়া ও নীরব গণমাধ্যম এবং আরও অনেক কিছু এর সঙ্গে জড়িত ছিল!’

ট্রাম্পের এই টুইটের পর রয়টার্স, এনবিসি, সিএনএনসহ যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এই টুইটে ‘পরাজয় স্বীকারের’ বার্তা রয়েছে বলে খবর প্রকাশ করে। কিন্তু এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ট্রাম্প ইউটার্ন নেন।

আরেকটি টুইটে তিনি লেখেন– ‘তিনি (বাইডেন) শুধু ভুয়া সংবাদমাধ্যমের চোখে জিতেছেন। আমি কিছুই স্বীকার করিনি। আমাদের এখনও অনেক পথ পাড়ি দেয়া বাকি আছে। এটি ছিল একটি পাতানো নির্বাচন।’

প্রসঙ্গত ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ৪৬তম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ৩০৬ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন। প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩২ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। পপুলার ভোটেও ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে বাইডেন। ২০ জানুয়ারি নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন জো বাইডেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...