সফলভাবে চাঁদ স্পর্শ করল চীন

সফলভাবে চীনের আরও একটি যান চাঁদের মাটি স্পর্শ করল। চ্যাং’ই-ফাইভ নামের রোবটিক যানটি পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহটির পাথর ও বালির নমুনা নিয়ে ফিরে আসবে। এ খবর বিবিসির।

অভিযানটি পরিচালিত হচ্ছে ওসেনাস প্রসেলারারাম নামে পরিচিত একটি নিকটবর্তী অঞ্চলে, যেখানে রয়েছে আগ্নেয়গিরির লাভার জটিল বিন্যাসে গঠিত মনস রামেকার।

আগামী কয়েক দিন এ অঞ্চলে অনুসন্ধান চালাবে চন্দ্রযানটি। সংগ্রহ করবে নমুনা।

নিকটবর্তী অঞ্চল বলতে চাঁদের যে মুখটি পৃথিবী থেকে দেখা যায়, তাকে বোঝানো হয়। এর আগে উল্টোদিকের দূরবর্তী অঞ্চলে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একটি যান পাঠায় এশিয়ার দেশটি।

চ্যাং’ই-ফাইভে রয়েছে ক্যামেরা, স্পেক্টোমিটার, রাডার, স্কুপ ও ড্রিল মেশিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। অভিযানের লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে ২ কেজির মতো মাটির নমুনা সংগ্রহ। যা কক্ষপথে প্রদক্ষিণকারী যানের মাধ্যমে পৃথিবীতে পাঠানো হবে।

৪৪ বছর পর চাঁদে এ ধরনের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এর আগে সর্বশেষ সোভিয়েত লুনা টোয়েন্টিফোর মিশনের ২০০ গ্রামের নমুনা আনা হয়।

গত সপ্তাহে চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় হাইনান প্রদেশ থেকে ৮.২ টনের চ্যাং’ই-ফাইভ চন্দ্রযানটিকে একটি রকেটে করে উৎক্ষেপণ করা হয়। ১১২ ঘণ্টার মহাকাশ সফর শেষে চন্দ্রযানটি শনিবার চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করে। আর মঙ্গলবার চাঁদের নিকট প্রান্তে অবতরণ করে।

তবে এই বৈজ্ঞানিক সাফল্য চীনের টেলিভিশন লাইভ প্রচার করেনি। চন্দ্রযান মাটি স্পর্শের পর খবরটি নিশ্চিত করা হয়। সঙ্গে ছবিও প্রকাশ করা হয়। সেখানে চন্দ্রযানের ছায়া দেখা যায় চাঁদের মাটিতে।

এ অভিযান উপলক্ষে চীনকে অভিনন্দন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা। নাসার শীর্ষ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. টমাস জুরবুচেন আশা করেন, চাঁদের নতুন এ নমুনা আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীরা বিশ্লেষণের সুযোগ পাবেন। যা মহাকাশ গবেষণাকে আরও এগিয়ে নেবে।

এর আগে চাঁদে চীনের দুটি যান সফলভাবে অবতরণ করে। সর্বপ্রথমটি ছিল ২০১৩ সালের চ্যাং’ই- থ্রি। আর গত বছর অবতরণ করে চ্যাং’ই-ফোর। তবে ছোট আকারের ওই দুই অভিযানে কোনো নমুনা আনা হয়নি।

চন্দ্র অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৪০০ কোটির মতো নুড়ি ও বালি আনা হয়েছে পৃথিবীতে। যা আমেরিকার অ্যাপোলা ও সোভিয়েতের রোবেটিক লুনা প্রোগ্রামের আওতায় আনা। তবে বেশির নমুনাই মনুষ্যবাহী অভিযান থেকে পাওয়া।

ওই সব নমুনা অনেক পুরোনো, প্রায় ৩০০ কোটি বছর আগের। অন্যদিকে মনস রামেকারের নমুনা ১২০ থেকে ১৩০ বছরের পুরোনো। যা চাঁদের ভৌগোলিক ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। যা সৌরজগতের বয়স নির্ণয়সহ নানান ধরনের গবেষণায় কাজে লাগবে।

[১] [২] [৩]