বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সেই তামান্না

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৫ আগস্ট ২০২২, ২:১১ অপরাহ্ণ

জন্মগতভাবেই দুই হাত এক পা বিহীন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সেই তামান্না আক্তার নুরা প্রতিবন্ধী কোঠায় পরীক্ষা না দিয়েও গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ‘ক’ ইউনিটে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ওয়েবসাইটে গুচ্ছের ‘ক’ ইউনিটের ফল প্রকাশিত হয়। এবারের পরীক্ষায় পাসের হার ৫৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ। প্রকাশিত ফলাফলে তামান্না ৪৮.২৫ নম্বর অর্জন করেছেন।

তামান্না আক্তার নূরা নিজেই বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিক রেজাল্টে খুশি লাগছে। নম্বরও ভালো পেয়েছি। আশা করি যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাব।

তামান্না বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও অন্যান্য ভাই-বোনদের খরচ চালিয়ে বাবার পক্ষে আমাকে পড়ানো কঠিন হয়ে পড়বে। তাই আমার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছা রয়েছে। যে নম্বর এসেছে সেই নম্বর দিয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ চয়েজ দেবেন বলে জানান তিনি।

এর আগে গত ৩০ জুলাই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের কেন্দ্রীয় গ্যালারিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তামান্না। তিনি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া আলীপুরের রওশন আলী ও খাদিজা পারভীন শিল্পী দম্পতির সন্তান।

শিক্ষাজীবনে অদম্য এই তরুণী শুধুমাত্র এক পা দিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সবকটি পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে সারাদেশে চমক দেখিয়েছেন। তামান্নার এই সাফল্যের কারণে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা খোঁজখবর নেন। একইসঙ্গে তারা দুই বোন তামান্নার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসেন। তার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থাও করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা।

উল্লেখ্য, তামান্না আক্তার নূরার জন্ম ২০০৩ সালের ১২ ডিসেম্বর। তামান্নার বাবা রওশন আলী ঝিকরগাছা উপজেলার দাউলিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার (ননএমপিও) শিক্ষক। মা খাদিজা পারভীন গৃহিণী। তিন ভাইবোনের মধ্যে তামান্না সবার বড়। ছোট বোন মুমতাহিনা রশ্মি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। ভাই মুহিবুল্লা তাজ প্রথম শ্রেণিতে। ছয় বছর বয়সে তামান্নাকে পায়ে কাঠি দিয়ে লেখানোর চেষ্টা করে তার পরিবার। গেল বছরে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পরে গত ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করাসহ দুটি স্বপ্নের কথা জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন তামান্না।

সেই চিঠির প্রেক্ষিতে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ফোন দিয়ে তামান্নাকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা। একইসঙ্গে দুই বোন তামান্নার স্বপ্ন পূরণে যে কোনো সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...