ইউএনওর সই জাল করে ৪২ জনকে খাস জমি, সার্ভেয়ার গ্রেপ্তার

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৫ আগস্ট ২০২২, ৭:৩৯ অপরাহ্ণ

কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করে ৪২ জনকে সরকারি খাস জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। এরপর সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলাপাড়া থানা ওসি মো. জসিম।

এদিকে, এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. ওবায়দুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত দল গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। তদন্ত দলের অপর দু’জন সদস্য হলেন জেলা রেজিস্টার মো. কামাল হোসেন ও কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীনদের জন্য পাকা ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এ জন্য প্রত্যেক ভূমিহীনকে দুই শতাংশ করে খাস জমি উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়েছে। যাদের নাম চুড়ান্ত করা হয়েছে, তাদের তালিকা প্রস্তত করে ইউএনও স্বাক্ষর করেন এবং উপজেলা সাব-রেজিষ্টারের কাছে জমা দিতে সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরকে নির্দেশ দেন। এ সুযোগে সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির ইউএনওর তালিকা পাল্টে নিজে একটি তালিকা প্রস্তত করেন এবং তাতে অতিরিক্ত ৪২ জনের নাম অন্তর্ভূক্ত করেন। হুমায়ুন কবির তালিকা প্রস্তত করে তাতে ইউএনওর স্বাক্ষর স্ক্যান করে বসান। পরবর্তীতে উপজেলা সাব-রেজিস্টারের মাধ্যমে তাদের অনুকূলে খাস জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ভূমি অফিসের গত ২৮ মার্চে ইস্যুকৃত এক নম্বর স্মারকে ২২ জন ভূমিহীনের স্থলে ৩১ জন, ২৪ এপ্রিল দুই নম্বর স্মারকে ১২০ জন ভূমিহীনের স্থলে ১৩২ জন এবং ৯ মে তিন নম্বর স্মারকে ৫৩ জন ভূমিহীনের স্থলে ৭৪ জন ভূমিহীন দেখিয়ে কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। সর্বমোট ১৯৫ জন ভূমিহীনের স্থলে ২৩৭ জনকে খাস জমির কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত ৪২ জনের মধ্যে কারো নামে দুই একর, কারো নামে দেড় একর এবং কারো নামে তিন একর করে সরকারের ৭২ একর ৬৩ শতাংশ খাস জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়েছে।

সার্ভেয়ার যে ৪২ জনের নামে কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন, তাদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারি ওই খাস জমির আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে এই ৪২ জনের নামে কোনো খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া সাব-রেজিস্টার তালিকা দেখে রেজিস্ট্রি করে দিবেন এটাই ছিল নিয়ম। সাবরেজিস্টারও তালিকা যাচাই না করে কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। এ জন্য সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...