অধ্যক্ষের গাফিলতিতে পরীক্ষা দেওয়া হলো না জিনারুলের

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ৬:৪৯ অপরাহ্ণ

নির্ধারিত সময়ে দুই হাজার টাকা দিয়ে স্কুল/কলেজে ফরম ফিল আপ করেছিলো জিনারুল, কিন্তু প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়নি। ওই সময় অধ্যক্ষ ছিলেন নুরুল আমীন। নানা অনিয়মের কারণে বহিস্কৃত হন তিনি। নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে গেলে তার প্রবেশপত্র কলেজে নেই বলে জানায়। বহিস্কৃত অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে পরীক্ষার আগের দিন প্রবেশ পত্র দেওয়া হবে মর্মে জানায়। কিন্তু পরীক্ষার দিন সকালেও জিনারুল প্রবেশ পত্র হাতে পায়নি। সহপাঠিরা পরীক্ষার রুমে ঢুকে গেলেও, জিনারুল হাতে ফাইল, কলম, স্কেলসসহ পরীক্ষা দেওয়ার সব সরঞ্জাম নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়েছিল। অঝোরে কান্নায় ভেঙে পড়ছিল সে। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার জোতকার্ত্তিক (কারিগরি) বিএন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ দৃশ্য চোখে পড়ে।

জিনারুল ইসলাম উপজেলার বালুদিয়াড় টেকনিক্যাল বিএম কলেজের এসএসসি শিক্ষার্থী ও উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের বামনদিঘী গ্রামের সৈয়ব আলীর ছেলে।

পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে জিনারুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়। সে কান্নাজড়িত কন্ঠে জানায়, নির্ধারিত সময়ে সে তার প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তৎকালীন অধ্যক্ষ নুরুল আমীনের কাছে ২ হাজার টাকা দিয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছিল। কিন্তু তাকে প্রবেশ পত্র প্রদান করা হয়নি। নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাফ জানিয়ে দেন প্রবেশপত্র কলেজে নেই। বহিস্কৃত অধ্যক্ষর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, পরীক্ষার আগের দিন প্রবেশ পত্র দেওয়া হবে। কিন্তু তার হাতে মেলেনি প্রবেশপত্র।

জিনারুল আরো জানায়, তার বাবা একজন ভ্যান চালক। সে একমাত্র ছেলে। পরিবারের অর্থ কষ্ট ঘোচাতে সে নিজেও পড়াশোনার পাশাপাশি নানা কাজ করে অর্থ উর্পাজন করে। তার ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা করে ছোট্ট একটা চাকুরি করবে। ভ্যান চালক বাবার কষ্ট লাঘব করবে। অথচ অধ্যক্ষের কারণে সে পরীক্ষাতেই অংশগ্রহণ করতে পারলো না।

বালুদিয়াড় টেকনিক্যাল বিএম কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু কাওসার শামসুজ্জামান জানান, জিনারুল ইসলাম একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। সে বহিস্কৃত অধ্যক্ষের কাছে ফরম পূরণের টাকা দিয়েছিল। কিন্তু তিনি ফরম পুরণ না করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এজন্য জিনারুল পরীক্ষা দিতে পারছে না। ওই অধ্যক্ষকে নানা অনিয়মের কারণে উপজেলা শিক্ষা বিভাগ গত ৩ জুলাই সাময়িক বহিষ্কার করেছে।

বালুদিয়াড় টেকনিক্যাল বিএম কলেজের বহিস্কৃত অধ্যক্ষ নুরুল আমীন বলেন, আমি বহিষ্কার হবার পর থেকে আর কলেজে যাইনি। ওই শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। তাকে আমি প্রবেশপত্র দেবো এরকম কখনও বলিনি। পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র বুঝিয়ে দেওয়া নতুন অধ্যক্ষের দায়িত্ব, আমার না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিন বলেন, ওই পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র না পাওয়ার বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে আমরা অবগত হয়েছি। এখন তার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানোর উপায় নেই। তবে ওই শিক্ষার্থী চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...