সব
স্বদেশ বিদেশ ডট কম
আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে সীমান্তে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ২১০ জনে দাড়িয়েছে। শুক্রবার দুই দেশের পক্ষ থেকে এই হালনাগাদ তথ্য জানানো হয়েছে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
এএফপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন করে যুদ্ধে জড়িয়েছে দুই প্রতিবেশী দেশ আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান। গত সোমবার রাতভর হওয়া এই যুদ্ধে উভয়পক্ষের প্রায় ২১০ সেনা নিহত হয়েছেন। শুক্রবার নিজেদের নিহত সেনার সংখ্যা ৭১ থেকে বেড়ে ৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানায় আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
অন্যদিকে আর্মেনিয়ার মন্ত্রীসভার বক্তিতায়, প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেছেন, এখন পর্যন্ত আর্মেনিয়ার নিহত সেনার সংখ্যা ১৩৫ জন এবং অনেকে আহত হয়েছেন। তবে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
আর্মেনিয়ার মানবাধিকারবিষয়ক ন্যায়পাল ক্রিস্টিনা গ্রিগরিয়ান পরে জানান, আজারবাইজানি বাহিনীর গোলাবর্ষণে একজন বেসামরিক নাগরিকও নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ছয়জন।
এদিকে ইউএস হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, তিনি শনিবার ইয়েরেভান সফর করবেন এই সপ্তাহের উত্তেজনা বাকু এবং ইয়েরেভানকে একটি শান্তি চুক্তির কাছাকাছি নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন।
এরআগে আর্মেনিয়া দাবি করেছিলো, মঙ্গলবার সকালে বেশ কিছু শহরে ফের হামলা করেছে আজাবাইজান। এটিকে ‘বড় ধরনের উসকানি’ বলে অভিহিত করেছে তারা। এর পাল্টা জবাব দেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছে আর্মেনিয়া। তবে আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ বলছে, আর্মেনিয়া আগে হামলা চালিয়েছে।
মঙ্গলবার রাশিয়া জানিয়েছে, আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের মধ্যে সবশেষ লড়াই থামাতে তারা মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে।
আর্মেনিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে, তবে লড়াই পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। আর আজারবাইজান বলেছে, প্রতিবেশীদের উসকানির জবাব দেয়ার কাজ শেষ করেছে তারা।
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে প্রায় তিন দশক ধরে সংঘাত চলছে। কিছুদিন আগেও সংঘাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। সে সময় সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত তিনজন নিহত হন। আহত হন আরও কয়েকজন। উভয়পক্ষই একে ওপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে।
আজারবাইজান তখন অভিযোগ তোলে, আর্মেনিয়ার মদতপুষ্ট বিচ্ছিন্নতবাদী কারাবাখ যোদ্ধারা ওই অঞ্চলে আজারি সেনাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। তাই আজারবাইজান বাধ্য হয়ে ওই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান চালায়।
বিপরীতে আর্মেনিয়ার অভিযোগ ছিল, বিতর্কিত এলাকায় আজারবাইজানই প্রথম অভিযান চালিয়েছে। রুশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর টহলদারী এলাকায় আজারবাইজানের সেনারা ঢুকে পড়লে তাদের বাধা দেয়া হয়।
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের মধ্যে অবস্থিত হলেও ১৯৯৪ সালে যুদ্ধের পর থেকে সেটি জাতিগত আর্মেনীয়দের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ২০২০ সালের যুদ্ধে অঞ্চলটি ফের দখলে নেয় আজারি সৈন্যরা। ছয় সপ্তাহের ওই যুদ্ধে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। পরে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক নাগোরনো-কারাবাখে দুই হাজার রুশ শান্তিরক্ষী মোতায়েন রয়েছে।
Developed by: Helpline : +88 01712 88 65 03