বিধবাকে অন্ত:সত্ত্বা ও নবজাতককে হত্যার অভিযোগে আওয়ামীলীগ নেতা গ্রেফতার

সিলেট অফিস,

  • প্রকাশিত: ১ অক্টোবর ২০২২, ৯:১০ পূর্বাহ্ণ

এক বিধবা মহিলাকে অন্ত:সত্ত্বা ও নবজাতক ছেলেকে গলাটিপে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম মেম্বারকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে জৈন্তাপুরের মুজিবনগরে। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার গোয়াবাড়ী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শরুফা বেগম (৩৫) এর স্বামী ১০ বছর পূর্বে মারা যান। এরপর ৮ বছর বয়সী এক ছেলেকে নিয়ে বাবা’র বাড়ি কমলাবাড়ী গ্রামে বসবাস করেন। গত বছরে উপজেলার গোয়াবাড়ীতে গৃহহীন অসহায় পরিবারের জন্য নির্মিত হয় মুজিবনগর গ্রাম। সেখানে ১২৮নং ঘরে সরকারী বরাদ্দ পান কমলাবাড়ী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ আলীর মেয়ে শরুফা বেগম। পরবর্তীতে মুজিব নগরের সরকারী ঘরে ছেলেকে নিয়ে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন।

দরিদ্রতার সুযোগে শরুফা’র সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে একই গ্রামের বাসিন্দা ১নং নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম (৫০)। তার সহযোগী ছিল একই গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার ছেলে সুহেল আহমদ (৩৩) ও লামনীগ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে ট্রাক চালক জমির উদ্দিন। বিভিন্ন সময় তাদের শারীরিক সম্পর্কে অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়ে শরুফা বেগম। দীর্ঘ ৭ মাস পর গতকাল শুক্রবার ভোর ৬টায় নিজ ঘরে তিনি এক ছেলে সন্তান প্রসব করে।

এ খবর জানার পর ফখরুল, সুহেল ও জমিরের পরামর্শে নবজাতক শিশুটিকে গলাটিপে হত্যা করে স্থানীয় সাইদুরের বাড়ীর পাশে মাটিচাপা দেওয়া হয়। এ সময় সাইদুরের মা ঘটনা দেখে আশ-পাশের লোকজনকে বিষয়টি জানালে গ্রামবাসী জৈন্তাপুর থানা পুলিশকে খবর দেয়। সংবাদ পেয়ে ওসি তদন্ত আব্দুর রবের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটিচাপা দেওয়া শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। এ সময় শরুফা বেগমের জবানবন্দি অনুযায়ী অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আওয়ামীলীগ নেতা ফখরুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভিকটিম মহিলাকেও থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

এদিকে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে ঘটনার সাথে জড়িত অপর দুই ব্যক্তি সুহেল ও জমির গা-ঢাকা দেয়।
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম দস্তগীর আহমদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে এবং ভিকটিমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রধান অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলামকে আটক করা হয়। জড়িত অপর ব্যক্তিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, নবজাতক শিশুটিকে ডিএনএ টেষ্টের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন এবং শিশু হত্যা মামলার দায়ের করা হয়েছে।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...