লোডশেডিং : চট্টগ্রামে উৎপাদন ব্যাহত, বিপর্যস্ত জনজীবন

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ২ নভেম্বর ২০২২, ৭:৫৩ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামে লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শিল্প কারখানায় উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শহরের চেয়ে গ্রামে লোডশেডিং অনেক বেশি। গত সোম ও মঙ্গলবার চট্টগ্রামে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং ছিল। এমনকি বুধবার সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ৭ থেকে ৮ বার লোডশেডিং হয়েছে। প্রতিবার লোডশেডিংয়ের সময় ছিল এক ঘণ্টা করে। এতে অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরের বাসিন্দারা।

পিডিবি জানায়, বিদ্যুতের বরাদ্দ-স্বল্পতায় লোডশেডিংয়ের শিডিউল ঠিক রাখা যাচ্ছে না। গড়ে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ মেগাওয়াটের লোডশেডিং করা হচ্ছে। চট্টগ্রামে গড়ে এখন দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। অর্ধেকের চেয়ে কম বিদ্যুৎ নিয়ে কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে চলছে।

জানা যায়, লোডশেডিংয়ে চট্টগ্রামে শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। শিল্প এলাকা ছাড়াও নগরী জেলায় বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে ছোটবড় শিল্প-কারখানা রয়েছে। শিল্প এলাকায় বিদ্যুতের আলাদা লাইন রয়েছে। তারপরও যখন তখন লোডশেডিং করা হচ্ছে। আগেভাগে লোডশেডিংয়ের শিডিউল ঠিক রাখা যাচ্ছে না। ঘনঘন বিদ্যুতের আসাযাওয়ায় কারখানার মূল্যবান মেশিনের ক্ষতিসাধন করছে।

পিডিবি জানায়, চট্টগ্রামে সরকারি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ১ হাজার ৪৮৬ মেগাওয়াট। আর চট্টগ্রামের দৈনিক চাহিদা ১ হাজার ২৮৬ মেগাওয়াট। ফলে চট্টগ্রামে উৎপাদিত বাকি বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এছাড়া ভারী ও হালকা শিল্প কারখানার জন্য দৈনিক ৬০০ থেকে ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকে। কিন্তু সব মিলিয়ে দৈনিক প্রায় ৯০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না।

নগরীর বন্দর এলাকার বাসিন্দা রানা দাশ জানান, সোমবার ও মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটানা দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। বিদ্যুৎ আসার ২০ মিনিট পর আবার চলে যায়। বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সাত বার লোডশেডিং হয়। আর প্রতিবার ১ ঘণ্টার কমে আসে না। এছাড়া লোডশেডিং এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহাবুবুল আলম বলেন, বিদ্যুতের ঘনঘন আসা-যাওয়া শিল্প-কারখানায় উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এতে মেশিন নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে। শিল্প এলাকায় লোডশেডিংয়ের শিডিউল ঠিক করে দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। তখন শিল্পমালিক কাজের সমন্বয় করে উৎপাদন করতেন। এখন শিল্প-কারখানায় উৎপাদন বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

পিডিবির চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক চৌধুরী বলেন, চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। আবাসিক ও শিল্প কারখানায় লোডশেডিং করা হচ্ছে। এখন আমাদের করার কিছু নেই। মালিকদের রেশনিং করে কারখানা চালাতে বলেছি। বিদ্যুৎ উৎপাদন ঠিক না থাকায় লোডশেডিংয়ের সিডিউলও ঠিক রাখা যাচ্ছে না।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...