খাসিয়া সম্প্রদায়ের সেং কুটস্নেম অনুষ্ঠিত

সিলেট অফিস,

  • প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০২২, ৩:২৬ অপরাহ্ণ

বহু ভাষাভাষী ও বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় অন্যতম একটি সম্প্রদায় খাসিয়া। যাদের মূল জীবিকা পাহাড়ে পান চাষাবাদ। তাদের রয়েছে বৈচিত্র্যময় জীবনগাঁথা।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বুধবার (২৩ নভেম্বর) দিনব্যাপী কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জিতে খাসিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান (খাসিয়া আদিবাসী ভাষায় ‘খাসি সেং কুটস্নেম’) অনুষ্ঠিত হয়।

জানা যায়, সেং কুটস্নেম বা বর্ষ বিদায় ও বরণ খাসিয়াদের একটি সার্বজনীন উৎসব। প্রাচীন খাসিয়া সমাজে দেবতার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশের মধ্য দিয়েই এ উৎসব পালিত হত। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও উপজেলার মাগুরছড়া পুঞ্জির খেলার মাঠে নানা সমাহারে এ উৎসব উদযাপিত হয়।

আয়োজকেরা জানান, সেং কুটস্নেম উৎসবে দিনব্যাপী সবাই মিলে ঐতিহ্যগত খেলাধুলা, ঐতিহ্যগত পোষাক পরিধান, সাংস্কৃতিক পরিবেশনাসহ ঐতিহ্যবাহী খাবার খেয়ে তারা আনন্দ ফুর্তি করে নিজেদের সামাজিক সম্পর্কে সুদৃঢ় করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হন তারা। ফুটবল মাঠের একপ্রান্তে বাঁশের খুঁটির উপর প্রাকৃতিক পরিবেশে নারিকেল গাছের পাতার দিয়ে ছাউনী দিয়ে আলোচনা সভার মঞ্চ তৈরি করা হয়।

জানা যায়, মাগুরছড়া পুঞ্জির মাঠে এবার ঐতিহ্যগত ৩০টি স্টলের মেলা বসে। মেলায় খাসি জনগোষ্ঠীর লোকেরা বাহারী পণ্যের পসরা নিয়ে আসেন। বিভিন্ন স্টলে খাসিয়াদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, পান, মশলা, তীর-ধনুকসহ বাঁশ বেতের জিনিসপত্র সাজিয়ে রাখা হয়। খাসিয়া তরুণ প্রজন্মের পাশাপাশি, বাংলাদেশে খাসিয়াদের প্রাচীন ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য বর্ষ বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে জানা গেছে।

বৃহত্তর সিলেটে প্রায় ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জির খাসিয়ারা মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খাসি সেং কুটস্নেম অর্থাৎ বর্ষ বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। তাদের এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বাঙালি ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষসহ দেশী-বিদেশী পর্যটকরা অংশগ্রহণ করে থাকেন।

মাগুরছড়া পুঞ্জির মন্ত্রী ও খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের জিডিশন প্রধান সুচিয়াং জানান, খাসি সেং কুটস্নেম উপলক্ষে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যেসব অতিথিরা আসেন তাদের সংবর্ধনা ও কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়। উৎসবে বিশেষ কাউকে আনুষ্ঠানিভাবে অতিথি করা হয় না। যারা উৎসবে যোগ দেন তাদের সবাইকে খাসি সেং কুটস্নেম উৎসবের অতিথি হিসেবে গণ্য করা হয়।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...