নেইমারের চোট ‘ডিরেক্ট ট্রমা’, তবে আশাবাদী কোচ তিতে

কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বৃহস্পতিবার সার্বিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ম্যাচে ৬২ মিনিট ও ৭৩ মিনিটে রিচার্লিসনের গোলে জয় নিশ্চিত করে সাম্বা বাহিনী। কিন্তু খেলার ৭৯ মিনিটে দলের চিন্তা বাড়িয়ে মাঠ ছাড়েন ব্রাজিল তারকা স্ট্রাইকার নেইমার জুনিয়র। মাঠ ছেড়ে বেরনোর সময় দেখা যায় নেইমার তার ডান পায়ের গোড়ালিতে চোট পেয়েছেন। এই ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে ব্রাজিল জাতীয় দলে। নেইমারের বেঞ্চে বসে কাঁদার ছবি চিন্তার মেঘ বাড়িয়েছে।

পিএসজি ফরোয়ার্ডকে সারা ম্যাচ জুড়ে কড়া ট্যাকেল করেন সার্বিয়ান নেমানিয়া গুদেল এবং নিকোলা মিলেনকোভিচ। এরপরেই ম্যাচের ১১ মিনিট বাকি থাকতেই মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। রিজার্ভ বেঞ্চে বসে তাকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়।

পাওয়ার ফুটবলের উপর নির্ভর করে বারবার নেইমারকে আটকে দেন সার্বিয়ার হেড কোচ ড্রাগন স্টোকোভিচের ছেলেরা। শারীরিক সক্ষমতা দিয়ে নেইমারের খেলা নষ্ট করে দেওয়ার পাশাপাশি তাকে চার্জ করতেও দেখা গেল। নেইমারকে প্রথমার্ধেই পাঁচবার ফাউল করে সার্বিয়া।

ম্যাচ শেষে ভিনিসিয়াস বলেন, নেইমার আঘাত পেয়েছে, তবে আশা করি এটা বড় কিছু নয়। যদিও ব্রাজিলের কোচ তিতে ২৮ নভেম্বর সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে নেইমারের না খেলার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে দলের ডাক্তার রদ্রিগো লাসমার এই বিষয়ে কোচের তুলনায় কম আশাবাদী বলে জানা গিয়েছে।

ব্রাজিল দলের ডাক্তার লাসমার বলেন, নেইমারের ডান পায়ের গোড়ালিতে আঘাত লেগেছে। সে বেঞ্চে থাকাকালীনই আমরা চিকিৎসা শুরু করি। আরও ভাল মূল্যায়নের জন্য আমাদেরকে অবশ্যই ২৪-৪৮ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে। যদিও এমআরআই করা হয়নি এবং আমরা এত তাড়াতাড়ি কোনও মন্তব্য করতে পারি না।

ব্রাজিল তারকা স্ট্রাইকার নেইমার ম্যাচের ৬৮ মিনিটে চোট পেয়েও খেলা চালিয়ে যান এবং রিচার্লিসনের বিস্ময়কর গোলে তার যথেষ্ট অবদান ছিল।

নেইমারের চোটের বিষয়ে ব্রাজিল কোচ তিতে বলেছেন, খেলার সময় চোট পেয়েও দলের কথা ভেবে মাঠ ছেড়ে উঠে যাননি তিনি। এই ঘটনাকে অসাধারণ বলে বর্ননা করেছেন তিতে। তিতে জানিয়েছেন যে এই বিশ্বকাপে নেইমারের খেলা চলিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী তিনি।

এই ম্যাচের নায়ক রিচার্লিসনও নেইমারের ফিটনেস নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, মনে হচ্ছে নেইমার গোড়ালিতে আঘাত পেয়েছেন। ডোপ টেস্টে যাওয়ার আগে আমি তাকে দেখেছিলাম এবং চোটের জায়গায় বরফ দিতে বলেছিলাম। পরের ম্যাচের আগে তার সুস্থ হয়ে ওঠা আমাদের জন্য ১০০ শতাংশ গুরুত্বপূর্ণ।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার ফুল-ব্যাক জুয়ান ক্যামিলো জুনিগারের ট্যাকেলের পড়ে নেইমার বিশ্বকাপের বাকি খেলা থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন। ব্রাজিলের মাটিতে সেলেসাওদের ৭-১ গোলে পরাজিত করে জার্মানি। সেই ম্যাচে জার্মানির বিপক্ষে সেমিফাইনালে খেলতে পারেননি নেইমার।

এদিকে ব্রাজিলের পরের ম্যাচ ২৮ নভেম্বর সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে৷ আর ৩ ডিসেম্বর গ্রুপ পর্বের শেষ খেলা ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে ৷ ম্যাচগুলিতে নেইমার খেলতে পারেন কিনা সেটাই জানার অপেক্ষায় গোটা ফুটবল বিশ্ব৷

[১] [২] [৩]