দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কোনো বেতন না নেওয়া বিষয়ে নিজের অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। এ ছাড়া মন্ত্রীদের কম বেতন দেওয়ার পাশাপাশি ছোট আকারের মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মালয়েশিয়ার ১০ম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শুক্রবার প্রথম অফিস করেছেন আনোয়ার ইব্রাহিম। বৃহস্পতিবার বিকেলে শপথ নেন তিনি। শুক্রবার বিকেলে প্রথম দিনের কাজ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, মন্ত্রীদের আগের চেয়ে কম বেতন দেওয়া ও ছোট মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে মন্ত্রিসভার আকার হবে ছোট। নতুন মন্ত্রীদের কম বেতন নেওয়ার বিষয়ে আমার সঙ্গে একমত হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। বিষয়টি এখনো আলোচনা ও প্রস্তুতির প্রক্রিয়ায় রয়েছে।’

এর আগে নিজে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেতন না নেওয়ার কথা জানান আনোয়ার। তিনি বলেন, তাঁর মূল অগ্রাধিকার হচ্ছে, মানুষের জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় কমানো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিবাচক কিছু পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। যেমন এ মুহূর্তে রিংগিত (মালয়েশীয় মুদ্রা) ও পুঁজিবাজার শক্তিশালী হচ্ছে। এটি সরকারের প্রতি আস্থার প্রকাশ। কিন্তু এখন জীবনযাত্রার ব্যয় ও জনগণের বোঝা বাড়িয়ে দেওয়া দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করছি।’

জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে সরকারি সংস্থাগুলোকে অনতিবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ ও আগামী সোমবারের মধ্যে বৈঠক করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান আনোয়ার ইব্রাহিম।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমাদের প্রধান কাজ, জনগণের ওপর চাপ কমানো, তা প্রশাসন জানে।’

এদিকে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, গাবুঙ্গান রাকিয়াত সাবাহ (জিআরএস) পার্টি জাতীয় ঐক্যের সরকারে যোগ দেবে বলে তাঁকে জানিয়েছেন সাবাহ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হাজিজি নুর। এতে নতুন ঐক্যের সরকার পার্লামেন্টে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে।

১৯ নভেম্বর মালয়েশিয়ার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রতিদ্বন্দ্বী মূল দুই জোটের কোনোটি ২২২ আসনের পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। নির্বাচনে আনোয়ার ইব্রাহিমের পাকাতান হারাপান (পিএইচ) জোট সর্বোচ্চ ৮২টি আসনে জেতে। আর মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের দল পেরিকাতান ন্যাসিওনাল (পিএন) পেয়েছে ৭৩ আসন।

বিদায়ী ক্ষমতাসীন জোট বারিসান ন্যাসিওনাল ৩০টি আসন পায়। কিন্তু তারা কোনো জোটকে সমর্থন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে কোনো পক্ষই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারেনি। এতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল হয়।

শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক অচলাবস্থা অবসানের দায়িত্ব পড়ে সুলতান আবদুল্লাহ সুলতান আহমাদ শাহর ওপর। তিনি দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বসে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন। পাশাপাশি আগের সরকারপ্রধানদের সঙ্গে পরামর্শ করে আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেন।

[১] [২] [৩]