কাঠের নৌকায় ভেসে ভেসে ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছে ৫৮ রোহিঙ্গা

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২, ৬:০৬ অপরাহ্ণ

প্রায় এক মাস ধরে একটি কাঠের নৌকায় ভেসে থাকার পর ৫৮ রোহিঙ্গা শরণার্থী ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের এক সৈকতে ভেসে এসেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

স্থানীয় পুলিশের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, ভেসে আসা সবাই পুরুষ, তাদের সবাইকে ক্ষুধা ও পানিশূন্যতার কারণে খুব দুর্বল দেখা যাচ্ছিল। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সমুদ্রে দীর্ঘ এবং গুরুতর সমুদ্রযাত্রার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় পুলিশ প্রধান রলি ইউইজা অ্যাওয়ের মতে, রবিবার ভোরে আচেহ বেসার জেলার মাছ ধরার গ্রাম লাদং-এর ইন্দ্রপাত্র সৈকতে রোহিঙ্গাদের একটি দল পৌঁছেছিল। গ্রামবাসীরা রোহিঙ্গা পুরুষদের একটি কাঠের নৌকায় দেখেছিল তারা তাদের অবতরণ করতে সাহায্য করেছিল এবং তারপর কর্তৃপক্ষকে তাদের আগমনের কথা জানায়।

অ্যাওয়ে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নৌকাটির ইঞ্জিন নষ্ট ছিল, বাতাস এটিকে আচেহ বাসার জেলার লাডং গ্রামের তীরে নিয়ে আসে। তারা গ্রামবাসী এবং অন্যদের কাছ থেকে খাবার এবং জল পেয়েছিল। এই শরণার্থীদের আপাতত সরকারি একটি কেন্দ্রে রাখা হবে বলে এক অভিবাসন কর্মকর্তা প্যারিসভিত্তিক ওই বার্তা সংস্থাটিকে বলেছেন।

দুইদিন আগেই জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা সমুদ্রে দুই সপ্তাহ ধরে ভেসে থাকা প্রায় ১৮০ জন রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকাকে সহায়তা করতে আন্দামান সাগরের আশপাশের দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল। তবে ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছানো এ রোহিঙ্গারা কয়েক সপ্তাহ ধরে সাগরে ভাসমান দেড় শতাধিক শরণার্থীর অংশ কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বাংলাদেশ, মিয়ানমার না অন্য কোথাও থেকে তারা যাত্রা শুরু করেছিল, তাও জানা যায়নি।

২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর নির্মম নিপীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা কয়েক লাখসহ ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তবে প্রতি বছর হাজার হাজার রোহিঙ্গা তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই অঞ্চলের অন্যান্য মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ভ্রমণের জন্য বিপদজনক যাত্রা করে।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, আনুমানিক ১ হাজার ৯২০ জন রোহিঙ্গা এই বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে সমুদ্রপথে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ ছেড়েছে। মালয়েশিয়া নৌকাগুলোর জন্য একটি সাধারণ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে এবং পাচারকারীরা সেখানে শরণার্থীদের একটি ভাল জীবন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।

সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...