ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রার্থী আত্মগোপনে: ইসি আনিছ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনের প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ আত্মগোপনে আছেন বলে মনে করছেন নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান। তিনি বলেছেন, পারিপার্শ্বিক যে কথাগুলো আসছে যেগুলো ভাইরাল হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে আত্মগোপনে আছেন।

মঙ্গলবার রাজধানীতে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

নিখোঁজ প্রার্থীকে কোনো বাহিনী তুলে নেয়নি জানান এই নির্বাচন কমিশনার। প্রার্থী খুঁজে না পাওয়ায় ভোটের মাঠে নতুন মেরুকরণ হবে না বলে মনে করেন এই কমিশনার।

বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগে শূন্য হওয়া ৬ আসনে উপনির্বাচন আগামী বুধবার। ভোটের এক দিন আগেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি নিখোঁজ।

পরিবারের সদস্যরা বলছেন, শুক্রবার রাত থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তারা। বিএনপির দলছুট নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপের প্রসঙ্গ টেনে এই কমিশনার বলেন, সেখানে যে কথাবার্তাগুলো অন্যান্য যে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেছে তাতে তো মনে হয়, এ রকম একটা পরিকল্পনা আগেই করা ছিল। সেটিই ঘটেছে এ রকম অনুমান করতে কোনো ইয়ে নেই।

নিখোঁজ প্রার্থীকে খুঁজে বের করার নির্দেশ ছিল জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, গণমাধ্যমের সামনে এসে সে বলবে কোথায় কীভাবে গিয়েছিল। আমাদের কাছে এটুকু তথ্য আছে সরকারি কোনো বাহিনী এ কাজটি করেনি।

আনিছুর রহমান বলেন, একটা লোক যদি কেউ লুকিয়ে থাকে ইচ্ছা করে তাহলে তাকে খুঁজে বের করা একটু কঠিন।

নির্বাচন কমিশনের কাছে যে তথ্য-উপাত্ত আছে তার ওপর ভিত্তি করে এই কমিশনার বলেন, তাতে এ রকমই ধারণা জন্মে সম্ভবত সে অডিওটা যে শুনেছি। সেই অডিওতে এ রকমই আছে। তার স্ত্রীর নামে তিনি তার কণ্ঠে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন কী নিয়ে যেতে হবে। সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দিতে বলেছে। ১০ মিনিট পরে বের হয়ে গেলে চালু করতে তার মানে কী? মানে হচ্ছে একটা পরিকল্পনা তারা করেছে। এটাই আমরা অনুমান করছি। এ রকম মনে হচ্ছে।

নিখোঁজ প্রার্থীর অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে দাবি করে এই কমিশনার বলেন, নিজের গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য তিনি নিজেও বলেছেন তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে।

রিপোর্ট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এই কমিশনার বলেন, রিপোর্টে বলা আছে সে নিখোঁজ। নিখোঁজ আর আত্মগোপন সমার্থকই বলা যায়। নিজেও নিখোঁজ হতে পারে। কেউ আটক করে রাখতে পারে। পারিপার্শ্বিক যে কথাগুলো আসছে যেগুলো ভাইরাল হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে আত্মগোপনে আছে।

প্রার্থী খুঁজে না পাওয়ায় ভোটের মাঠে ভিন্ন মেরুকরণ করবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মনে হয় না তেমন কিছু হবে। খুব বেশি যে প্রভাব পড়বে এ রকম কিছু না। কারণ তিনি থাকতেন তাতে কী হবে, না থাকলেই কী হবে। তার স্ত্রী তার পক্ষে সব কাজ করে যাচ্ছেন।

বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আবু আসিফের নিখোঁজের ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা মূলত একটা রিপোর্ট চেয়েছিলাম। ডিসি-এসপি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে আমরা একটি রিপোর্ট চেয়েছিলাম। গণমাধ্যমে দেখে আমরা স্ব-উদ্যোগে কথা বলেছিলাম। সে কারণেই আমরা চাইলাম কী ঘটেছে সেটার রিপোর্ট চেয়েছি। আপনারা (সাংবাদিকরা) যা লিখেছেন সেটাই পাঠিয়েছে।

আবু আসিফ আহমেদ কোথায় আছে সেটা একবার জানা গিয়েছিল জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, পরে আর লোকেট করা যায়নি। পুলিশ র‍্যাবসহ অন্যান্য এজেন্সি প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

ছয় আসনে ভোটের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসি আনিছুর রহমান বলেন, যথারীতি সব প্রস্তুতি আছে। খালি একটাই নাই, সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করি নাই।বাকি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন করার জন্য যা যা করার দরকার সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। ভোট কেন্দ্রে নিরবচ্ছিন্নভাবে সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোট চলবে। ইভিএমে ভোট দেয়ার জন্য ভোটার এডুকেশন যথেষ্ট করা হচ্ছে।

[১] [২] [৩]