বিশেষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেবে এনটিআরসিএ

সারা দেশে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের শূন্যপদ আছে ৬৮ হাজারের বেশি। এ শূন্যপদ পূরণ করতে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি দেয়া হয় গত ১২ ডিসেম্বর। দেড় লাখের বেশি চাকরিপ্রার্থী আবেদন করলেও নির্বাচিত হয়েছেন ৩২ হাজার ৪৩৮ জন প্রার্থী। প্রায় ৩৫ হাজার শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য কাউকে সুপারিশ করতে পারেনি বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।

তুলনামূলক কঠিন বিষয়ে যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া, নারী কোটায় কাঙ্ক্ষিত প্রার্থী না পাওয়া এবং চাকরিতে আছেন এমন ইনডেক্সধারীরা আবেদন করতে না পারায় বিশাল সংখ্যক পদ ফাঁকা রয়ে গেছে। এসব পদ পূরণ করতে কিছুটা ছাড় দিয়ে ‘বিশেষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি’ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এনটিআরসিএ।

এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. এনামুল কাদের খান বলেন, ‘অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, আমরা কেন চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ৩৫ হাজারের বেশি প্রার্থীকে নিয়োগ দিইনি। বিষয়টি আসলে একটু জটিল। কোনো কোনো বিষয়ে অনেক আবেদন জমা পড়েছে। যেখানে সব প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করা যায়নি। আবার কোনো কোনো বিষয়ে আবেদন কম পড়েছে কিন্তু সেসব বিষয়ে বেশিসংখ্যক প্রার্থীর নিয়োগ দেয়ার সুযোগ ছিল।’

এই বিষয়ে উদাহরণ দিতে গিয়ে চেয়ারম্যান মো. এনামুল কাদের খান বলেন, ‘চারুকলা বিষয়ে পদ খালি ছিল ৩ হাজার কিন্তু আমরা আবেদন পেয়েছি ১১ জনের। আবার সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে ১ হাজার ৬৩৩টি পদ খালি, সেখানে আবেদন এসেছে ১৯ হাজার। আবার একটি বিষয়ে পদ আছে ৪ হাজার, আবেদন করেছেন ৪২ হাজার প্রার্থী। এখানে আমরা সবাইকে নিয়োগ দিতে পারিনি। এ রকম পরিস্থিতিতে পদ খালি না থাকা সবাইকে নিয়োগ দেয়া যায়নি। পদ খালি ছিল, প্রার্থীরা আবেদন করেছেন কিন্তু আমরা তাতে সুযোগ থাকার পরও নিয়োগ দিইনি, এমনটা হয়নি। তবে যেসব পদে নিয়োগ দেয়া যায়নি, তা অন্য গণবিজ্ঞপ্তি থেকে পূরণের উদ্যোগ নিচ্ছি আমরা। আমাদের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কাজ করছেন।’

বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি থেকে ৩৫ হাজার প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, ‘অন্য গণবিজ্ঞপ্তি থেকে সেগুলো পূরণ করা যাবে। তাই বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির পরিকল্পনা আমাদের নেই।’

সম্প্রতি চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। ফলাফলে ৩২ হাজার ৪৩৮ জন প্রার্থীকে নির্বাচন করা হয়েছে। এনটিআরসিএর এক বিজ্ঞপ্তিতে ফলাফল প্রকাশের কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ৩২ হাজার ৪৩৮ জন প্রার্থীকে নির্বাচন করা হয়েছে। প্রাথমিক নির্বাচনের ফলাফল এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি নামক সেবা বক্সে পাওয়া যাচ্ছে।

এ ছাড়া নির্বাচিত প্রার্থী এবং প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের খুদে বার্তার মাধ্যমে ফল জানানো হয়েছে। নির্বাচিত প্রার্থীরা নিজ নিজ আবেদন আইডি ও মুঠোফোন নম্বর দিয়ে লগইন করে ফলাফল দেখতে পারবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা নিজ নিজ ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে তার প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত প্রার্থীর তথ্য দেখতে পারবেন। কোনো নির্বাচিত প্রার্থী কিংবা প্রতিষ্ঠানপ্রধান টেকনিক্যাল কারণে খুদে বার্তা না পেলে এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটের চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি-২০২২ সেবা বক্স থেকে প্রাথমিক নির্বাচনের ফলাফল দেখতে পারবেন।

এনটিআরসিএ বলছে, এবার নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন অনলাইনে করার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এটি করা গেলে অল্প সময়েই নিয়োগ পাবেন নির্বাচিত প্রার্থীরা।

নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম অনলাইনে পূরণের কথাও বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম (ভি-রোল) অনলাইনে পূরণ করে জমা দিতে হবে। ফরম জমা করা-সংক্রান্ত নির্দেশনা পরবর্তী সময় এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি ও নির্বাচিত প্রার্থীর মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে জানানো হবে।

গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ৬৮ হাজার ৩৯০ জন শিক্ষক নিয়োগের চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ।

 

[১] [২] [৩]