টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা, অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী

টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনির বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। বুধবার রাতে ওই কিশোরী বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলাটি করেছে। ধর্ষণের ঘটনায় কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করেছে।

গোলাম কিবরিয়া টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনিরের বড় ভাই। গোলাম কিবরিয়া জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিবের দায়িত্বে আছেন। মামলায় গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়েছে।

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমানকে মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওই কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য বৃহস্পতিবার সকালে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গোলাম কিবরিয়া। তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে তাকে হেয় করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে ওই কিশোরী উল্লেখ করেছে, গোলাম কিবরিয়া তার আত্মীয় ও পূর্বপরিচিত। হোয়াটসঅ্যাপে তাদের দুজনের যোগাযোগ ছিল। সম্প্রতি পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে ওই কিশোরীর বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের বিষয়টি গোলাম কিবরিয়াকে জানানোর পর তিনি সমস্যা সমাধান করে দেয়ার আশ্বাস দেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর গোলাম কিবরিয়া শহরের আদালত পাড়ায় নিজের বাড়ির পাশের একটি ভবনে ওই কিশোরীকে ডেকে নেন। সেখানে তার মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে গোলাম কিবরিয়া তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। পরে তাকে ধর্ষণ করে তার আপত্তিকর ছবি তুলে রাখা হয়। বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য গোলাম কিবরিয়া তাকে ভয়ভীতি দেখান।

মামলার এজাহারে বলা হয়, একপর্যায়ে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি গোলাম কিবরিয়া জানার পর গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তবে ওই কিশোরী রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ রাত আটটার দিকে গোলাম কিবরিয়া ওই কিশোরীকে তুলে নিয়ে আদালত পাড়ার একটি বাড়িতে যান। সেখানে একটি কক্ষে ওই কিশোরীকে তালাবদ্ধ করে রেখে গোলাম কিবরিয়া আবার ধর্ষণ করেন। এ ঘটনার পর গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী নিগার আফতাব ওই কিশোরীকে মারধর করেন। পরে দিবাগত রাত তিনটায় ওই কিশোরীকে বাড়িতে রেখে আসা হয়। শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকার জন্য মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে ওই কিশোরী এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক খন্দকার সাদিকুর রহমান বলেন, গাইনি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট লুৎফুন্নাহারকে প্রধান করে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড করা হয়েছে। এই বোর্ড ওই কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষা করবে।

 

[১] [২] [৩]