সব
স্বদেশ বিদেশ ডট কম
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের উত্তরাঞ্চলের উত্তপ্ত মরুভূমিতে বাংলাদেশিসহ কয়েক হাজার অভিবাসী আটকা পড়েছেন। তপ্ত মরুভূমিতে অভিবাসীদের দীর্ঘ এই সারিতে অনেকে দুর্বল হয়ে পড়েছেন বলে বৃহস্পতিবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, উত্তর নাইজারের সিলুয়েত্তে এলাকার সমতল মরুভূমিতে অভিবাসীদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। যারা সমতল মরুভূমিতে হাঁটছেন। তাদের মধ্যে যারা সবল তারা সামনে আর দুর্বলরা পেছনে হাঁটছেন।
প্রতি সপ্তাহে আলজেরিয়া থেকে বিতাড়িত শত শত অভিবাসী নাইজার সীমান্তের প্রথম গ্রাম আসামাকায় পৌঁছান।
এএফপি বলছে, সিলুয়েত্তের সমতল মরুভূমিতে প্রায় সাড়ে ৪ হাজারের বেশি অভিবাসী আটকা পড়েছেন। সাহারা মরুভূমিতে আটকা এই অভিবাসীদের বেশিরভাগই মালি, গিনি এবং আইভোরি কোস্টের নাগরিক। তবে তাদের মধ্যে সিরীয়, এমনকি বাংলাদেশিও রয়েছেন।
কেবল নাইজারের নতুন এক এলাকায় প্রবেশ করার জন্য তারা ১৫ কিলোমিটার বর্জ্যভূমিজুড়ে হাঁটছেন। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) পরিচালিত একটি ট্রানজিট কেন্দ্র ওই অভিবাসীদের জায়গা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে পৌঁছানো অভিবাসীদের মাত্র এক তৃতীয়াংশকে কোনও রকমে ঠাঁই দিতে পেরেছে সংস্থাটি।
আইভরি কোস্ট থেকে আসা আবদুল করিম বামবারা বলেন, ‘এখানে পৌঁছানোর পর আমাদের বলা হয়েছিল, আমরা আইওএমের স্বীকৃত অভিবাসী নই। আর এই কারণে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য পরিবহন ব্যয় নিজেদেরই বহন করতে বলা হয়েছে।’
আসামাকার পানির ট্যাংকগুলো প্রায় শূন্য হয়ে গেছে। খাবারের রেশনও অপর্যাপ্ত এবং সূর্যের কড়া তাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার মতো যথাযথ আশ্রয়ের ব্যবস্থাও নেই সেখানে। ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হাজার হাজার মানুষ আসামাকার দেয়াল বা ত্রিপলের নিচে ছায়া খুঁজছেন।
অভিবাসীরা বলছেন, আলজেরিয়ায় তাদের সম্পত্তি দখল করা হয়েছে। ইউরোপে নতুন জীবনের আশায় তারা এই মরুভূমি পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এছাড়া বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য পরিবহনের খরচ কিংবা স্বজনদের সাথে ফোনে কথা বলার মতো অর্থও নেই তাদের কাছে। তারা মরুভূমিতে উন্মুক্ত কারাগারে আটকে রয়েছেন। আর তাদের এই আটকা দশা কখনও কখনও কয়েক মাস ধরে চলতে থাকে।
নাইজারের মরুভূমিতে আটকা অভিবাসীদের মধ্যে চিকিৎসক, শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ীর মতো অনেক মেধাবী মানুষও রয়েছেন। কিন্তু আইওএমের কাঁটাতারে ঘেরা দেয়ালের মাঝখানে কে কী, তার সবই ভুলে যাওয়া হয়।
আইভোরি কোস্টের নাগরিক হারমান এই অভিবাসীদের একজন। তিনি বলেন, আমরা গবাদিপশুর মতো হয়ে গেছি। অভিবাসীদের অনেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ, খোস পাঁচড়া বা অন্যান্য রোগে ভুগছেন। আমাদের সবাই ক্ষুধার্ত।
আইওএমের ওই আশ্রয় কেন্দ্রে ভাতের ওপর মাছি ভন ভন করছে, তা দেখিয়ে এএফপির প্রতিনিধিকে একজন অভিবাসী বলেন, ‘আপনি এটা দেখেছেন? আপনি কি এসব খাবেন? আমরা এতে অসুস্থ হয়ে পড়ছি।’
Developed by: Helpline : +88 01712 88 65 03