এডিস মশা নিধনে ঘাটতি আছে, ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২৩, ৬:০৮ অপরাহ্ণ

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি কর্পোরেশন এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এডিস মশা নিধনে ঘাটতি রয়েছে। যে পর্যন্ত রোগী বাড়তে থাকবে সে সময় পর্যন্ত আমরা ভাবব ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই তারা আরও বেশি করে কাজ করুক, যাতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসে। এখনো কাজের জায়গা রয়ে গেছে, গ্যাপ রয়ে গেছে। যেখানে স্প্রে করা হয় নাই, এখনো বেশি (মশা) আছে তা কমানো দরকার।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মশা নিধনে ঘাটতির কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা নিয়মিত সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে কাজ করছি। তাদের পরামর্শ দিচ্ছি। আমাদের গবেষণা টিম কাজ করছে। আমাদের বিভিন্ন গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য সিটি কর্পোরেশনকে দিচ্ছি। আমি আশা করবো সিটি কর্পোরেশন তার চেষ্টায় কোনো ঘাটতি রাখবে না। একইসঙ্গে আমরা জানতে পেরেছি নতুন ওষুধ আনা হয়েছে। সেটি ভালো কার্যকর কি না তা পরীক্ষার মাধ্যমে ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ২৪ ঘণ্টায়ও সারাদেশে ২০০ জনের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর বেশিরভাগই রাজধানী ঢাকায়। গত দুইদিনে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুও হয়েছে। আমরা ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। হাসপাতাল ও চিকিৎসক-নার্সদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া উভয়ই মশাবাহিত রোগ। এটি মোকাবিলায় আমাদের সবাইকে সতর্ক হতে হবে।

২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া নির্মূল হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ম্যালেরিয়ায় একসময় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। ম্যালেরিয়া মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এ মশা নোংরা পানিতে জন্মায়। একটি মশা মাস খানেক বেঁচে থাকে এবং অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে। তার জীবনকালে সে অসংখ্য মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, দেশের তিনটি পার্বত্য জেলায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব এখনো রয়েছে। সেখানে এখনো আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আমরা এসব এলাকায় বিশেষ নজর দিচ্ছি।

এছাড়া বর্ডার এলাকায় বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, মশার জন্য তো কোনো বর্ডার নেই। কিন্তু ম্যালেরিয়া আক্রান্ত মানুষ যেন বর্ডার পার করে আসতে না পারে সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম।

এতে বলা হয়, দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ১৩ জেলার ৭২ উপজেলায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ রয়েছে। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান -এই তিন পার্বত্য জেলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি।

তবে ২০০৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যু কমেছে। ২০০৮ সালের তুলনায় ২০২২ সালে ম্যালেরিয়াজনিত অসুস্থতা শতকরা ৭৯ ভাগ এবং মৃত্যু শতকরা ৯১ ভাগ কমেছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশ মোট ম্যালেরিয়া রোগী ছিল ১৮ হাজার ১৯৫ জন ও মারা গেছেন ১৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশিদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক আহমেদুল কবীর, বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা প্রমুখ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...