অশ্রুসিক্ত নয়নে ক্রিকেটকে বিদায় বললেন তামিম

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৬ জুলাই ২০২৩, ২:০৯ অপরাহ্ণ


তামিম ইকবাল যা করেন তা আচমকাই করেন। ২০২২ সালের জুলাইতে আকস্মিক ফেসবুক পোস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। এবারও হল তাই। শুধু ওয়ানডে ক্যাপ্টেন্সি নয়, অশ্রুসিক্ত নয়নে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকেই বিদায় বলে দিলেন দেশসেরা ওপেনার।

আফগানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে বর্তমানে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ দল। সিরিজের প্রথম ম্যাচে বৃষ্টি আইনে ১৭ রানে হেরেছে টাইগাররা। প্রথম ওয়ানডের আগে শতভাগ ফিট না হয়েই খেলার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন তামিম। পুরোপুরি ফিট না থাকায় ব্যাট হাতে মাত্র ১৩ রান করেই আউট হয়েছেন তিনি। এসব নিয়েই আলোচনা-সমালোচনায় সরগরম ছিল দেশের ক্রিকেটাঙ্গন।

বুধবার (৫ জুলাই) গভীর রাতে টাইগার অধিনায়ক জানিয়েছিলেন আজ দুপুর ১২ টায় সংবাদ সম্মেলন করবেন তিনি। তবে সংবাদ সম্মেলনের সময় পেছানো হয়। ঠিক দুপুর ১ টা ১৫ মিনিটেই শুরু হয় প্রেস মিট। সেই সংবাদ সম্মেলন গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কান্নাভেজা চোখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন তামিম ইকবাল।

এসময় শুরু থেকেই দেখা যায় তার চোখে পানি। বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। মিনিট দশেক পর কথা শুরু করেই তামিম জানান, ‘গতকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচটিই ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার শেষ ম্যাচ। এই মুহূর্ত থেকে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি। সিদ্ধান্তটি হুট করে নেওয়া নয়। অনেকদিন ধরেই আমি এটা নিয়ে ভাবছি। পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেছি এটা নিয়ে।’

 

অশ্রুসিক্ত নয়নে ক্রিকেটকে বিদায় বললেন তামিম ইকবাল । ছবি: সংগৃহীত

তামিম শুরুতেই বলেন, নরম্যালি এমন সময়ে যে কোনো ক্রিকেটারই স্পিচ লিখে নিয়ে আসে, কিন্তু এমন কিছু আমি করিনি। খুব দ্রুতই শেষ করবো আমি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ১৬ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের জন্য তামিম ধন্যবাদ দিয়েছেন সতীর্থ, কোচ, বিসিবি, পরিবার ও সমর্থকদের, ‘ক্যারিয়ারের এই দীর্ঘ পথচলায় আমার সব সতীর্থ, সব কোচ, বিসিবির কর্মকর্তাগণ, আমার পরিবার ও যারা আমার পাশে ছিলেন, নানাভাবে সহায়তা করেছেন, ভরসা রেখেছেন এবং আমার ভক্ত-সমর্থক, বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনুসারী, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনাদের সবার অবদান ও ভালোবাসায় আমি চেষ্টা করেছি সব সময় দেশের জন্য নিজের সবটুকু উজাড় করে দিতে।’

এরপর কান্নাভেজা কণ্ঠে কিছুটা ডুকরে উঠে সময় নিয়ে তামিম বলেন, ‘আমি সব সময়ই একটা বলেছি, আমি ক্রিকেট খেলি আমার বাবার স্বপ্নপূরণের জন্য।’

উল্লেখ্য, ৩৪ বছর বয়সী তামিম তার ১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ২৪১টি একদিনের ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩৬.৬২ গড়ে ৮ হাজার ৩১৩ রান করেছেন, সেঞ্চুরি ১৪টি, ফিফটি ৫৬টি। টেস্টে ৭০ ম্যাচে ৩৮.৮৯ গড়ে ৫ হাজার ১৩৪ রান করেছেন তামিম। সেঞ্চুরি ১০টি ও ফিফটি ৩১টি। এই সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ও সেঞ্চুরি করেছেন তামিম। টি-টোয়েন্টিতে ৭৪ ম্যাচে ১৭০১ রান করেছেন তামিম। এই সংস্করণে দেশের হয়ে শুধু তামিমই সেঞ্চুরি করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৫ সেঞ্চুরি করা তামিম তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১৫ হাজারের বেশি রান করেছেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...