সব
স্বদেশ বিদেশ ডট কম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শাটল ট্রেন দুর্ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আলাদা তিন ঘটনায় প্রশাসন বাদী হয়ে তিনটি অজ্ঞাতনামা মামলা করেছেন। এ ঘটনায় আরও মামলা করা হবে বলেও জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।
শুক্রবার বিকেল ৫টায় উপাচার্যের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আলাদা তিনটি ঘটনার মধ্যে উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর, পরিবহন দপ্তরে যানবাহনে ভাঙচুর ও শিক্ষক ক্লাবে ভাঙচুরের ঘটনায় এ মামলা করা হয়েছে।
চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিণ আখতার বলেন, শাটল ট্রেনের যে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি রাতেই শিক্ষার্থীদের সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থার জন্য সেখানে (চমেক) যাই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক, তারা আমাকে পর্যন্ত হামলার উদ্দেশ্যে উপাচার্য বাংলো ভাঙচুর করেছে। এটা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী করতে পারে না।
ভাঙচুরের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে জানতে চাইলে শিরীণ আখতার বলেন, যারা ভাঙচুর চালিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছে, তারা অত্যন্ত গর্হিত কাজ করেছে। কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনটি মামলা করা হবে।
শাটল ট্রেন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শাটল ট্রেনের ব্যাপারে আমরা রেলওয়েকে বলতে বলতে শেষ। এমনকি রেলওয়ে মন্ত্রী আমাদের গত বছরই বলেছিলেন ট্রেন দেবেন। আমরা পাইনি। তারা বলেছে তারা চেষ্টা করছে আরও দুই তিনটা বগি বাড়ানোর।
তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, বিভিন্ন সময় তারা ট্রেনে বগি বৃদ্ধি ও সূচি বাড়ানোর দাবি জানালেও প্রশাসন আমলে নেয়নি। ট্রেনের ভেতরে জায়গা না থাকায় শিক্ষার্থীদের বাধ্য হয়ে ছাদে যাতায়াত করতে হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে আটটার শাটলটি চৌধুরী হাট এলাকায় পৌঁছালে রেললাইনের সাথে ঝুঁলে থাকা গাছের ডালের আঘাতে দুর্ঘটনার শিকার হয় শিক্ষার্থীরা। এতে ২৫ জন আহত হয়। এর মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশংকাজনক হলে তাদেরকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
তারা হলেন-বাংলা বিভাগের আমজাদ হোসেন সোহাগ (১৮) ও খলিলুর রহমান (২২) এবং জনপ্রশাসন বিভাগের আংসুইনু মারমা (২১)।
এছাড়া মাথায় আঘাত পাওয়া ৫ শিক্ষার্থীকে নিউরোসার্জারি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বাকিরা ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে দুর্ঘটনার পরপর ক্যাম্পাসের মূল ফটকে তালা দিয়ে ভাঙচুর করে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালানোসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস, মিনি বাস, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস সহ ৬৫টির মতো বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে বলেও জানান কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর একমাত্র বাহন শাটল ট্রেন৷ তবে দীর্ঘদিন ধরে শাটল ট্রেনে বগি সংকট ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষার্থীদের তুলনায় শাটল অপর্যাপ্ত হওয়ায় বাধ্য হয়ে ছাদে উঠতে হয় শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে শাটলের বগি বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসলেও মিলছে না কোন সুফল। যার ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
Developed by: Helpline : +88 01712 88 65 03