সব
স্বদেশ বিদেশ ডট কম
দেশে তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ (আল জিহাদী) নামের নতুন এক জঙ্গি সংগঠনের খোঁজ মিলেছে। সংগঠনটির শীর্ষ তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। আজ শনিবার এটিইউ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির প্রধান মো. আলীম মাহমুদ।
গ্রেপ্তাররা হলেন-মো.জুয়েল মোল্লাসহ (২৯), মো.রাহুল হোসেন (২১) ও মো. গাজিউল ইসলাম (৪০)।
এটিইউর প্রধান মো. আলীম মাহমুদ বলেন, গত চার মাসে আগে এই সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান পরিচালনা করে জুয়েলকে বাগেরহাট থেকে, জয়পুরহাট থেকে রাহুলকে ও রাজধানীর ভাসানটেক এলাকা থেকে গাজীউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে জুয়েল এই সংগঠনের প্রধান। বাকি দুই জন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। সংগঠনটি ২-৩ মাস তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। তাদের পরিকল্পনা ছিল ২০২৪ সালে দেশে বড় ধরনের জঙ্গি হামলা করা।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই আগে কোনো না কোনো জঙ্গি সংগঠনের সদস্য ছিলো। কিন্তু তারা নতুন লক্ষ্য নিয়ে একত্রিত হচ্ছিলো। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও ও পোস্টের মাধ্যমে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে আসছিলো। এই দলের প্রতিষ্ঠা ও প্রধান নেতা হলেন জুয়েল। আমরা প্রথমে জুয়েলকে বাগেরহাটের রামপাল থেকে গ্রেপ্তার করি। পরে তার দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বাকি দুই শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে গ্রেপ্তারের সময় নতুন সংগঠনের ৮টি ব্যানার জব্দ করা হয়।
আলীম মাহমুদ বলেন, তারা প্রাথমিকভাবে সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি অর্থও সংগ্রহ করছিলো। এই অর্থ দিয়ে তারা অস্ত্র কেনা সহকারে বোমা তৈরি সরঞ্জাম সংগ্রহ করার পরিকল্পনা ছিলো তাদের। এই অস্ত্র ও বোমা দিয়ে তারা বড় ধরনের জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা নিয়ে ছিলো।
আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য জসীম উদ্দিন রহমানি যিনি বর্তমানে কারাগারে সাজা ভোগ করছেন তার বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয় জুয়েল। এর ফলে তিনি নতুন এ জঙ্গি সংগঠনটি সৃষ্টি করে। জুয়েল নিজেও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য ছিলেন। জসীম উদ্দিন রহমানিকেও কারাগার থেকে মুক্ত করার পরিকল্পনা ছিলো জুয়েলের।
সংগঠনটির অর্থের যোগানদাতা কারা এবং সংগঠনটির সদস্য সংখ্যার বিষয়ে তিনি বলেন, সংগঠনটিতে এখন পর্যন্ত ৮০-৯০ জন সদস্য আছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাদের অর্থদাতা কে তা এখনো জানা যায়নি। তবে সংগঠনটির অর্থ সংগ্রহের কাজ করছিলেন রাহুল। এছাড়া রাহুল বোমা তৈরির দায়িত্বেও ছিলো।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের হামলার পরিকল্পনার বিষয়ে এটিইউ কর্মকর্তা আলীম বলেন, এ বিষয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলার পরিকল্পনা ছিলো কিনা সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ২০২৪ সালে বড় একটি জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা ছিলো। সেই জন্য তারা অর্থ ও অস্ত্র সংগ্রহসহ বোমা বানানোর চেষ্টা করছিলো। তবে তাদের হামলার টার্গেট কি তা এখনো জানা যায়নি, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা জানার চেষ্টা করব।
সংবাদ সম্মেলনে এটিইউ’র পুলিশ সুপার (অপারেশনস্) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, নতুন জঙ্গি সংগঠনটির মূল পরিকল্পনাকারী জুয়েল মোল্লা নিষিদ্ধ ঘোষিত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়। ৯ মাস কারাগারে ছিলেন। এই সময়ে কারাগারে বসেই নিজের একটি সংগঠন করার পরিকল্পনা করে। মাত্র ক্লাস সেভেন পাস জুয়েল মোল্লা পেশায় একটি বেকারি কর্মী ছিলেন। আর বাকি গ্রেপ্তার দুইজন জবুত তাওহীদের সদস্য ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, রাহুল হোসেন পেশায় একটি আইটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছিলেন। প্রযুক্তির বিষয়ে জ্ঞান থাকায় রাহুল বোমা তৈরির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছিলেন হামলার জন্য। এছাড়া বোমা হামলার অর্থ জোগাতে নিজের জমি বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছেলন রাহুল। রাহুল অনলাইনে সদস্য সংগ্রহের কাজও করছি।
Developed by:
Helpline : +88 01712 88 65 03