ব্যাটিং ব্যর্থতায় বিশ্বকাপের আগে সিরিজ হার বাংলাদেশের

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:২৩ অপরাহ্ণ

 

বিশ্বকাপের আগে নিজেদের সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজটা সুখকর হয়নি বাংলাদেশ দলের জন্য। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডের পর তৃতীয় ম্যাচেও বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে স্বাগতিকরা। মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ৯১ বল হাতে রেখে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারায় নিউজিল্যান্ড।

প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ৮৬ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। তাতে সিরিজ জিততে না পারলেও ড্র করার সুযোগ ছিল স্বাগতিকদের সামনে। কিন্তু সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ৭ উইকেটে হেরেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ১৭২ রান তাড়ায় নেমে ৯১ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় কিউইরা।

স্বল্প লক্ষ্য তাড়ায় নেমে এদিন উইল ইয়াং ও হেনরি নিকোলসের দাপুটে ব্যাটিংয়ে সহজ জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। ৮০ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ৭০ রান করে দলীয় ১৩০ রানে মাঠ ছাড়েন ইয়াং। ইয়াংকে যতক্ষণে নাসুম আহমেদ বোল্ড করেছেন ততক্ষণে জয়ের খুব কাছে চলে যায় সফরকারীরা। জয়ের জন্য ১২৫ বলে লকি ফার্গুসনের দলের তখন প্রয়োজন মাত্র ৪২ রান। হাতে ছিল ৭ উইকেট। অসমাপ্ত কাজটা শেষ করে মাঠ ছাড়েন নিকোলস। ৮৬ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৫০ করে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

এর আগে ৯ ওভার পর্যন্ত কিউইরা সাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করার পর দশম ওভারে গিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন পেসার শরিফুল ইসলাম। ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে যথাক্রমে তিনি সাজঘরে ফেরান ফিন অ্যালেন ও ডিন ফক্সক্রফটকে। অ্যালেন ২৬ বলে ২৮ রান করলেও অভিষিক্ত ফক্সক্রফট গোল্ডেন ডাককে সঙ্গী করে মাঠ ছাড়েন। টানা ২ উইকেট তুলে লড়াইয়ে ফেরার আভাস দিয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর কোনো চমক দেখাতে পারেনি শরিফুল-হাসানরা।

এর আগে শান্তর নেতৃত্বে চার পরিবর্তন নিয়ে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। সিরিজ বাঁচাতে মরিয়া টাইগাররা এদিন শান্তর পাশাপাশি দলে ফেরায় মুশফিকুর রহিমকেও। এছাড়া এদিন অভিষেক হয় উইকেটকিপার-ব্যাটার জাকির হাসানের। তাতেও ব্যাটিংটা সুবিধার হয়নি। ৩৪.৩ ওভারে মাত্র ১৭১ রানে গুটিয়ে গেছে টাইগাররা। এদিন বুক চিতিয়ে একাই লড়েছেন অধিনায়কত্ব পাওয়া শান্ত। পাঁচ ম্যাচ পর দলে ফিরেও ব্যাটে ছিল না ছন্দপতনের আভাস।

তবে শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের। অভিষেক রাঙাতে পারেননি জাকির হাসান। দলীয় ৬ রানে ফেরেন জাকির। অ্যাডাম মিলনের বলে আউট হওয়ার আগে করেন ১ রান। ৮ রানের মাথায় ফেরেন আরেক ওপেনার তানজিদ তামিম। বোল্টের বলে আউট হওয়ার আগে করেন ৫ রান। ভালো শুরু করেছিলেন তাওহীদ হৃদয়। কিন্তু দলীয় ৩৫ রানে বাজে শট খেলে বিদায় নেন তিনিও। ১৭ বলে ১৮ রান করা হৃদয়কেও ফেরান মিলনে।

দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর পর ৫৩ রানের জুটিতে টাইগারদের ভরসা দেখাচ্ছিলেন এই ম্যাচ দিয়ে দলে ফেরা মুশফিক-শান্ত। কিন্তু ১৮ রান করে মুশফিকও দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হয়ে যান। পঞ্চম উইকেটে শান্ত আরেকটি জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে। ৪৯ রানের এই জুটিতে শতরান পূর্ণ হয় বাংলাদেশের। তার আগে ব্যক্তিগত ১ রানের মাথায় চতুর্থ বাংলাদেশি হিসেবে পাঁচ হাজার রান পূর্ণ করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

এদিন রিয়াদ অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি। ভালো শুরুর পরও ২৭ বলে ২১ রান করে মিলনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। বাংলাদেশের রান তখন ১৩৭। এরপর ১৫৬ রানে বোল্টের শিকার হন শেখ মেহেদী (১৩)।
এতক্ষণ পর্যন্ত দারুণ ব্যাটিং করছিলেন ওয়ান ডাউনে নামা শান্ত। এগিয়ে যাচ্ছিলেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতকের দিকে। কিন্তু ম্যাককঞ্চিয়েকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে যান তিনি। রিভিউ নিয়েছিলেন, অবশ্য তাতে লাভ হয়নি। ৮৪ বলে ৭৬ রান করেন শান্ত। তার ইনিংসে ১০টি চারের মার ছিল। শান্ত যখন বিদায় নেন তখন দলের স্কোর ছিল ১৬৮। বাকি তিন উইকেট বাংলাদেশ হারিয়েছে আর ৩ রান যোগ করতেই।

নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সফলতম বোলার অ্যাডাম মিলনে। ৬.৩ ওভারে ৩৪ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন এই পেসার। ৫ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন ম্যাককঞ্চিয়ে। ট্রেন্ট বোল্টও ২ উইকেট নিয়েছেন ৩৩ রানের বিনিময়ে। এছাড়া ১টি করে উইকেট নিয়েছেন লকি ফার্গুসন, রাচিন রবীন্দ্র।

 

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...