এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: এক মাসে পৌনে ৭ কোটি টাকার টোল

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৩ অক্টোবর ২০২৩, ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ


রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনে বহুল প্রতীক্ষিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালুর এক মাস পূর্ণ হলো আজ সোমবার (২ অক্টোবর)। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত চালু হওয়া অংশ উদ্বোধন করা হয় গেল মাসের ২ সেপ্টেম্বর। এর একদিন পর ৩ সেপ্টেম্বর যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। উদ্বোধনের পর এ উড়াল সড়ক দিয়ে এক মাসে গাড়ি চলেছে ৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫৫৮টি। এর মধ্যে ৯৯ শতাংশই ব্যক্তিগত গাড়ি। যেগুলোকে ক্যাটাগরি ১ বলা হয়ে থাকে। যার সংখ্যা ৮ লাখ ২৮ হাজার ৯৮৭টি। এক মাসে এসব গাড়ি থেকে টোল আদায় হয়েছে ৬ কোটি ৭৭ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, ক্যাটাগরি ২ বা মাঝারি ট্রাক (৬ চাকা পর্যন্ত) ৩২০ টাকা টোল, যার সংখ্যা ১৩৮০টি। ক্যাটাগরি ৩ বা ট্রাক (৬ চাকার বেশি) ৪০০ টাকা টোল, এ গাড়ির সংখ্যা ৪৯টি। আর ক্যাটাগরি ৪ বা সব ধরনের বাস (১৬ সিট বা তার বেশি) ১৬০ টাকা টোল, এসব গাড়ির সংখ্যা ছয় হাজার ১৪২টি। এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে গড়ে প্রতিদিন গাড়ি চলেছে ২৯ হাজার ৮৭৭টি। আর দৈনিক ২৪ লাখ ১৯ হাজার টাকার টোল আদায় হয়েছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) কিছু বাস ছাড়া এ উড়াল সড়ক এড়িয়ে চলেছে গণপরিবহন। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ফার্মগেটের খামারবাড়ি প্রান্ত থেকে বিআরটিসির বাস চলাচলের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী। এর মাধ্যমে গণপরিবহনে করে জনসাধারণ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন। তবে, এক্সপ্রেসওয়ের দুই প্রান্ত থেকে ওঠানামা করতে হচ্ছে যাত্রীদের। এর মধ্যে কোথাও বাস থামছে না।

এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করলে বেসরকারি গণপরিবহনগুলো যানজট এড়াতে পারতো। তবে এক্সপ্রেসওয়েতে উঠলে চলতি পথের যাত্রী সংকট হবে, এমন অজুহাতে চলাচল করছে না বেসরকারি গণপরিবহন। মহাখালী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন র‌্যাম্পটি চালু না হওয়ায় এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করছে না কোনো কোনো পরিবহন। ফলে নগরীর অভ্যন্তরে কমছে না গাড়ির অতিরিক্ত চাপ।

এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে দৈনিক সর্বোচ্চ ৮০ হাজার যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আর সর্বনিম্ন যানবাহন চলাচল করতে পারে সাড়ে ১৩ হাজার।

৮০ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করলে যে রাজস্ব আদায় হবে সেটির ২৫ শতাংশ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ পাবে। আর সেতু কর্তৃপক্ষ থেকে ১০ শতাংশ দেবে রেলওয়েকে।

তবে দৈনিক সাড়ে ১৩ হাজারের চেয়ে কম যানবাহন চলাচল করলে বিনিয়োগকারীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সরকারের। তবে কাওলা থেকে কুতুবখালি পর্যন্ত পুরো এক্সপ্রেসওয়ে চালু না হওয়া এবং ৮০ হাজারের বেশি গাড়ি চলাচল না করাতে এখন যে টোল আদায় হচ্ছে, তা পুরোটা পাবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।

এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার বলেন, পুরো এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে গাড়ি চলাচলের যে লক্ষ্যমাত্রা সেটি পূরণ হবে। তখন ৮০ হাজারের উপরে গাড়ি চললে রাজস্ব পাবে সরকার।

 

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি এ প্রকল্পের প্রথম চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের। প্রকল্পের মূল দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিমক ৭৬ কিলোমিটার। র‌্যাম্পসহ মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।

তবে ভূমি অধিগ্রহণ, নকশা বদল, অর্থ সংস্থানের জটিলতায় ৪ বার সময় বৃদ্ধির ফলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকায়।

 

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...