স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় আওয়ামী লীগের ১১ নেতাকে অব্যাহতি

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ

লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এমএ সাত্তারের (ট্রাক প্রতীক) পক্ষে কাজ করায় আওয়ামী লীগের ১১ জন নেতাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাসেম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওহাব (কন্ট্রাক্টর) স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানা যায়। তবে অব্যাহতি পাওয়া এসব আওয়ামী লীগ নেতারা এর নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করে এমন অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এজন্য আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

 

অব্যাহতি পাওয়া নেতারা হলেন-চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অহিদুজ্জামান বেগ বাবলু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন পাটওয়ারী, কোষাধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ পাটওয়ারী, শ্রম সম্পাদক নাছির পাটওয়ারী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, সামছুল আলম বাবুল পাটওয়ারী, নুরুল আমিন, সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী, লোকমান মাস্টার ও মো. খালেদ। একই অভিযোগে এর আগে ১৯ ডিসেম্বর মান্দারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওহাবের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। অব্যহতিপ্রাপ্ত নেতারা দলীয় কার্যক্রমে পর পর অনুপস্থিত, দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত রয়েছেন। এতে গঠনতন্ত্রের ৪৭ এর ১১ ধারা মোতাবেক ১০ নেতাকে দলীয় পদ থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। তারা ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের কোনো কমিটির পদে প্রার্থী হতে পারবেন না।

এদিকে অব্যহতি প্রাপ্ত নেতা ও মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এতে থানা কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হঁশিয়ারি দিয়েছেন।

স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, আপনাদের বিরুদ্ধে খুব শিগগির আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। থানা কমিটির কোনো নেতাকে, আপানারা থানা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়ে অব্যাহতি দেয়ার ক্ষমতা রাখেন না। নিশ্চই আপনারা আওয়ামী লীগের শত্রু, শেখ হাসিনার শত্রু। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন সর্বধিক চিন্তা করে একটি সুন্দর আংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়ে যাচ্ছেন। আপনারা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভোটারশূন্য নির্বাচন করার জন্য দলের পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের সম্মানহানী করছেন।

যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যহতিপ্রাপ্ত নেতা মোশারফ হোসেন পাটওয়ারী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের বিষয়ে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন। দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বা দলীয় কর্মীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার কোনো নির্দেশনাও নেই। সম্মেলনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতারা আমার নাম ঘোষণা করছেন। আমাকে অব্যাহতি দিতে হলে জেলা কমিটি কেন্দ্রে সুপারিশ করবেন। কেন্দ্র আমাদেরকে অব্যহতি দিতে পারবেন। থানা আওয়ামী লীগের দুই নেতা কোনোভাবেই আমাকে অব্যহতি দিতে পারবেন না।

 

সহ-সভাপতি পদ থেকে অব্যহতিপ্রাপ্ত নেতা অহিদুজ্জামান বেগ বাবলু বলেন, ফেসবুকে দেখেছি আমাদেরকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া হয়নি যে, নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্রের পক্ষে করতে পারবে না। বহিষ্কার বা অব্যাহতির নির্দেশনাও নেই। এ ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেয়া যায় তা নিয়ে আমরা বসবো।

চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব বলেন, দলের কার্যক্রমে অনুপস্থিত, গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও অনৈতিক কার্যকলাপে যুক্ত থাকায় জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনায় ১১ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অব্যাহতি প্রাপ্ত নেতারা কোনো প্রার্থীর ভোট করে তা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়।

প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক পিংকু নৌকার প্রার্থী। তার সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সাত্তার।

 

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...