মানুষের আচরণে জাবিতে কমেছে অতিথি পাখি

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ২:৪২ অপরাহ্ণ

প্রতিবছর শীত এলেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিড় করেন দেশের পাখিপ্রেমীসহ সাধারণ মানুষ। নানা জাতের বিদেশি পাখির অভরারণ্যে পরিনত জাবি ক্যাম্পাসে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের ভিড় থাকে। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে শীতে এখানে আসা অতিথি পাখিদের সংখ্যা দিনদিন কমে যাচ্ছে।

এর কারন হিসেবে, দর্শনার্থীর উৎপাত, লেকের পাশে খাবারের দোকান ও লেকে অতিরিক্ত কচুরিপানার কারণে তাদের স্বাভাবিক বিচরণ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অপরিকল্পিত উন্নয়ন, বহিরাগতদের অবাধে বিচরণ, গাড়ির উচ্চ শব্দের সমস্যার ফলে লেকগুলোয় পরিযায়ী পাখি কম দেখা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে ২৬টি লেক রয়েছে। এসব লেকে যেসব অতিথি পাখি আসে, তাদের বেশিরভাগই হাঁস জাতীয়। এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, পান্তামুখী, পাতারি, কোম্বডাক, পাতারি হাঁস, জলকুক্কুট, খয়রা ও কাম পাখি অন্যতম। এছাড়া মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা চিতা টুপি, লাল গুড়গুটি, বামুনিয়া হাঁস, নর্দার্নপিনটেল ও কাস্তে চাড়া প্রভৃতি পাখিও আসে এ ক্যাম্পাসে।

আবহাওয়াজনিত কারণে প্রচণ্ড শীত আর খাদ্য সংকটের কবলে পড়ে প্রতিবছর সুদূর সাইবেরিয়া থেকে হাজার মাইল পথ অতিক্রম করে অতিথি পাখি ছুটে আসে বাংলাদেশে। এছাড়া মঙ্গোলিয়া ও নেপালের হিমালয় অঞ্চলে শীত ও ভারি তুষারপাতে টিকতে না পেরে পরিযায়ী পাখিরা উষ্ণতার খোঁজে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে চলে আসে। শীতের রেশ কেটে গেলে বসন্তের সময়ে তারা তাদের নিজ ভূমিতে ফিরে যায়।

জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ ও ২০২২ সালে প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার পরিযায়ী পাখি এসেছিল। এছাড়া ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে ২০২০ সালে। ২০১৬ সালে ৬ হাজার ৭৮০, ২০১৭ সালে ৪ হাজার ৭৩১, ২০১৮ সালে ৪ হাজার ৯৭৫, ২০১৯ সালে ৪ হাজার ৭০৯ এবং ২০২০ সালে আসে ৮ হাজার ১২০টি পাখি।

ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী জেবুন্নেসা হামিদ বলেন, ‘আমরা আগের তুলনায় পাখির পরিমাণ কম দেখতে পেয়েছি। মূলত নীরব এলাকা ও পরিবেশে তারা থাকতে ভালোবাসে। করোনাকাল যার বড় প্রমাণ। এছাড়া লেকগুলো পরিষ্কার না করায় খাবারের সংকট তীব্র হয়েছে। জঙ্গল কেটে ফেলায় বাসস্থান সংকট বেড়েছে। সংরক্ষণ উপযোগী বাকি জায়গাগুলো যদি রক্ষণাবেক্ষণ করা যায় এবং বেশি গাছ লাগানো যায়, তাহলে সবুজের পরিমাণ বাড়বে। তখন ক্যাম্পাস পাখি থাকার উপযোগী হবে।’

 

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...