সংসদ সদস্য হতে নায়িকাদের ভিড়

গেল কয়েক বছরে সংসদ নির্বাচনে শোবিজ তারকাদের মনোনয়নপত্র কেনার হিড়িক যে পরিমাণে বেড়েছে সেটা এক দশক আগেও সেভাবে দেখা যায়নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তারকাদের সংসদে যাওয়ার ইচ্ছেগুলো বেশ আলোচিত হয়ে উঠেছে। অন্যবারের তুলনায় এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র কেনেন অনেক তারকা। নতুন হিসেবে নৌকার মাঝি হতে অনেকে মনোনয়ন ফরম কিনলেও নায়কদের মধ্যে একমাত্র টিকিট পেয়েছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস। ভোটেও বিপুল ব্যবধানে বিজয়ী হন।

এরপর গতকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নায়কদের পালা শেষে সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য এবার শোবিজ অঙ্গনের অর্ধ ডজনেরও বেশি তারকা মনোনয়ন কিনেছেন। এ তালিকায় রয়েছেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তার, সোহানা সাবা, তানভিন সুইটি, মেহের আফরোজ শাওন, শাহনূর, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর প্রমুখ।

এদিন সকাল সোয়া ১০টার দিকে অভিনেত্রী সোহানা সাবা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিজে এসে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। এরপর বেলা ১১টার দিকে আসেন অভিনেত্রী নিপুণ আক্তার এবং দুপুর সাড়ে ১২টায় মনোনয়ন ফরম কেনেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। এরপর একে একে দেখা যায় তানভিন সুইটি, মেহের আফরোজ শাওন, শাহনূর, জাকিয়া মুন, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী করকে।

রাজনীতির সঙ্গে জড়াতে পারা এবং মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে থাকতে পারাকে সৌভাগ্য বলে মনে করেন অপু বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলা থেকে মনোনয়নপত্র কিনলাম। আমার এলাকার মানুষ আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। দোয়া রাখবেন, আমি যেন এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে যেন কাজ করতে পারি।’

ফরম কেনার পর নিপুণ বলেন, ‘প্রথমত দোয়া চাই সবার। প্রধানমন্ত্রী যদি যোগ্য মনে করেন, তাহলে তিনি অবশ্যই বিবেচনা করবেন। ইতিপূর্বে দেশবাসীর কাছে যে ভালোবাসা আমি পেয়েছি, সেটাই চাই।’

এসময় ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর জানান, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তিনি। বললেন, ‘মনোনয়ন প্রাপ্তির ব্যাপারে আমি অনেক আশাবাদী। যেহেতু আমার রাজনীতির ক্যারিয়ার অনেক লম্বা। এলাকাসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে কাজ করেছি। মনোনয়ন পেলে কাজের পরিধিটা আরও লম্বা হবে।’

সোহানা সাবা বলেন, ‘আমরা খুবই ভাগ্যবান, বিগত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ আামাদের সঙ্গে আছে। ইনশাল্লাহ আগামী ৫ বছরও থাকবে। অবশ্যই আমি চাইব, আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেতে। অ্যাক্টিভলি আমি রাজনীতি করিনি। তবে নানা সময়ে যখন নির্বাচন হয়েছে, প্রচারণায় আমি ছিলাম। কিন্তু নিজে কখনো এভাবে ভাবিনি। আমার বাবা রাজনীতি করতেন, আমি কখনো রাজনীতি করব, এটা ভাবিনি।’

চিত্রনায়িকা শাহনূর (সৈয়দা কামরুন নাহার শাহনূর) বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। বিরোধী দলের আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও সক্রিয়ভাবে মাঠে ছিলাম। আমি নিজেও সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনীত করলে আমি তার কথা অনুসারে কাজ করতে চাই। নারীদের জন্য কাজ করতে চাই।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার বলেন, ‘ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ। আমাদের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের পর থেকেই পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে কাজ শুরু করে দেন। জেলা সফরে গিয়েও যোগ্য কাউকে দেখলে তার নাম লিখে রাখেন। সময় মতো সেটা কাজে লাগান।’

[১] [২] [৩]