মিয়ানমার থেকে ভেসে এলো বাংলাদেশির লাশ

গত ১ ফেব্রুয়ারি নাফ নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে সীমান্তের মিয়ানমার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে অপহৃত হয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক বাংলাদেশি মৎস্যজীবী। নিখোঁজের ১৮ দিন পর সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) উখিয়ার পালংখালী সীমান্তে এক নিখোঁজ বাংলাদেশি জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, মিয়ানমারের কোনও একটি বাহিনীর হাতেই অপহরণের পর খুন হন মোস্তাফিজুর রহমান।

স্থানীয় ও পুলিশ জানিয়েছে, কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নেরে আঞ্জুমানপাড়া সীমান্ত এলাকা থেকে গত ১ ফেব্রুয়ারি নাফ নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হন মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। রোববার রাতে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিলের নাফ নদীর বেড়িবাঁধের পাশে নাফ নদীর ছোট খালে একটি মরদেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। সে সময় মরদেহটি ছিল একটি কম্বলে পেঁচানো। পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবারের সদস্যরা মোস্তাফিজের মরদেহ শনাক্ত করে লাশটি বাড়িতে নিয়ে যান। মোস্তাফিজ পেশায় ছিলেন জেলে ও দিনমজুর।

মোস্তাফিজের ছোট ভাই আমির হোসেন জানান, গত ১ ফেব্রুয়ারি সকালে অন্য জেলেদের সঙ্গে নাফ নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। সেখান থেকেই মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর লোকেরা আমার ভাইকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল।

উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন বলেন, সরকারি বাহিনী হোক কিংবা মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীই হোক তাকে যারা হত্যা করেছে তারা মিয়ানমারের। অসহায় বাংলাদেশি জেলের মৃত্যুর ঘটনায় আমরা বিচারের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। উখিয়া থানার ওসি মো. শামীম হোসেন বলেন, নিখোঁজের ১৮ দিন পর তার মরদেহ খুঁজে পাওয়া গেছে নাফ নদীতে। লাশের গায়ে আমরা আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। পোস্ট মর্টেমের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এটা নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এদিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে নতুন করে গোলাগুলি না হওয়ায় গত কয়েকদিন ধরে উখিয়ার সীমান্ত এলাকা কিছুটা শান্ত ছিল। তবে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের ওপার থেকে আবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে বেশ জোরেশোরে। এমন অবস্থায় নৌযান চলাচলের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনায় নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন।

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির কারণে মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে নদীতে মাছ ধরার ট্রলার ও জনসাধারণের চলাচল বন্ধ রেখেছি।

[১] [২] [৩]