বৃটেনে ভাষা সংগ্রামের ৭২ বছর পালিত : বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাযা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহবান

আতিকুল ইসলাম, কার্ডিফ,

  • প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৮:২৬ পূর্বাহ্ণ

প্রচণ্ড শীত ও বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে মাতৃভাষার টানে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে গণতন্ত্রের মাতৃভূমি খ্যাত, মাল্টিকালচারেল,ও মাল্টিন্যাশনালের ওয়েলসের রাজধানী কার্ডিফের ইন্টারন্যাশনাল ম্যাদার ল্যাংগুয়েজ মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনারে ভাষা সংগ্রামের অহংকারের ৭২ বছর ২১শে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদানদের অমর স্মৃতির প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বিমম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছে ওয়েলস বাংলাদেশ কমিউনিটি।

কার্ডিফের কাউন্সিলার দিলওয়ার আলীও কাউন্সিলার জেসমিন চৌধুরী সহ ওয়েলস বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় ও সহযোগিতায় মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনার ফাউন্ডার্স ট্রাষ্ট কমিটির সেক্রেটারি ও ওয়েলস আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কমিউনিটি লিডার ও বিশিষ্ট সাংবাদিক মোহাম্মদ মকিস মনসুর এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই মহতি পোগ্রামে সুশৃঙ্খলভাবে কার্ডিফ কাউন্টি কাউন্সিলের কাউন্সিলারবৃন্দ, মনুমেন্ট ফাউন্ডার্স ট্রাষ্ট কমিটি, যুক্তরাজ্য ওয়েলস আওয়ামীলীগ, ওয়েলস কার্ডিফ বিএনপি, ওয়েলস যুবলীগ, ওয়েলস ছাত্রলীগ, গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের সাউথ ওয়েলস রিজিওন,কার্ডিফ বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন, গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের নিউপোট শাখা, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ওয়েলস বাংলাদেশ সোসাইটি, স্টার স্পোর্টস ইউকে বাংলা কাডিফ এফ সি, অর্গেনাইজেশন ফর দ্যা রেকগনিশন অফ্ বাংলা এ্যাজ এ্যান অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ অফ্ দা ইউনাইটেড নেশনস সাউথ ওয়েলস শাখা, ওয়েলস বাংলাদেশ উইমেন্স এসোসিয়েশন, ওয়েলস বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ওয়েলস কুলাউড়া সোসাইটি ইন ইউকে, জাস্টিস ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১ ইন ইউকে. বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক ফোরাম,ওয়েলস বাংলাদেশ ইয়ুথ সোসাইটি ইন ইউকে, ওয়েলস বাংলা প্রেসক্লাব, এটিন বাংলা ইউকে, ওয়েলস বাংলা নিউজ, মনসুর মিডিয়া,সহ বিভিন্ন সামাজিক,সাংস্কৃতিক, সংগঠন, উইমেন্স প্রতিনিধি, ও ব্যাবসায়ী, প্রতিনিধি, কমিউনিটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও ব্যাক্তিগতভাবে অনেক সাধারন জনসাধারণ ও বাংলাদেশ থেকে আগত বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টস ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদদের স্মরণে শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার মাধ্যমে উপস্থিত সকল বাঙ্গালীদের কন্ঠে উচ্চারিত হয় আজকের এই সমাবেশ যেন একখণ্ড বাংলাদেশ।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানকে সফল করতে উপস্তিত সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফাউন্ডার্স ট্রাষ্ট কমিটির পক্ষ থেকে কাউন্সিলার দিলওয়ার আলী বলেন ভাষা আন্দোলনের রক্তক্ষয়ী দিনটি এখন আর শুধু শোক ও বেদনার দিন নয়। জাতি ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সব মানুষের সব ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার এক সর্বজনীন উৎসবের দিন। একুশ আমাদের অহংকার ; একুশ আমদের আত্ম পরিচয় ; একুশের পথ ধরেই আমরা পেয়েছি লাল বৃত্ত সবুজ পতাকা।

“আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাবার পর অমর একুশের চেতনা আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে বলে উল্লেখ করে বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহবান জানিয়ে অর্গেনাইজেশন ফর দ্যা রেকগনিশন অফ্ বাংলা এ্যাজ এ্যান অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ অফ্ দা ইউনাইটেড নেশনস সাউথ ওয়েলস শাখার সভাপতি ও মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনার ফাউন্ডার্স ট্রাষ্ট কমিটির সেক্রেটারি মোহাম্মদ মকিস মনসুর বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশ্বের সব জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় ঐক্য ও বিজয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে। “স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা সকল দাপ্তরিক কাজে বাংলাভাষা ব্যবহারের নির্দেশ দেন। তিনি সংবিধানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করেন। বাংলায় জাতিসংঘে বক্তৃতা দিয়ে আমাদের মাতৃভাষাকে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিলেন এই ধারাবাহিকতায় মানণীয় প্রধানমন্ত্রী ম্যাদার অব ইউম্যানিটি দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও বাংলায় জাতিসংঘে বক্তৃতা দিয়ে এই ঐতিহ্যকে ধরে রেখে চলছেন, আসুন বাংলাদেশের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালুর ওপর জোর দেওয়ার উদ্দ্যোগ সহ বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাযা হিসাবে বাংলাকে স্বীকৃতি দেওয়ার আমাদের অব্যাহত ক্যাম্পেইনে সবার সহযোগিতার হাত প্রসারিত করার প্রত্যাশা করা হয়েছে।

এখানে উল্লেখ্য যে বৃটেনের ওয়েলসের রাজধানী ঐতিহ্যবাহী কার্ডিফ শহরের কমিউনিটির দীর্ঘ দিনের সপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৭ সালে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো। স্থানীয় কাউন্সিলের নানাবিদ জটিলতা নিরসনে ও কমিউনিটির কিছু দুষ্ট চক্রের অব্যাহত চক্রান্তকে মোকাবেলা করে ১২ বছরের নিরলস প্রচেষ্টার পর বৃটেনের ওয়েলসের ঐতিহ্যবাহী কার্ডিফ শহরের গ্রেইঞ্জমোর পার্কে কার্ডিফ কাউন্টি কাউন্সিলের প্রদত্ত নির্ধারিত জায়গায় বাঙালী জাতির অহঙ্কার ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাংগুয়েজ মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনার. ২০১৯ সাল থেকে পুরাপুরি দৃশ্যমান। এর পর থেকে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সহ প্রতিটি জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হচ্ছে।

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি, ‘বাংলা আমার দৃপ্ত স্লোগান, বাংলা আমার অহংকার’ ভাষা সংগ্রামের অহংকারের ৭২ বছর, বৃটেনের কার্ডিফের শহীদ মিনার আমাদের অহংকারের প্রতীক, বাংলাদেশ থেকে মানণীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরকার এর পক্ষ থেকে বিরাট অনুদাণ প্রদান সহ বৃটেনের বাংলাদেশের হাইকমিশন ও কার্ডিফ কাউন্টি কাউন্সিল এবং ফাউন্ডার ট্রাষ্ট কমিটির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বৃটেনের ওয়েলসের কমিউনিটির এই সপ্নের শহীদ মিনার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে এর পিছনে অনেকেই করেছেন অক্লান্ত পরিস্রম. ফাউন্ডার ট্রাষ্টি. লাইফ মেম্বার ও ফ্রেন্ডস অব মনুমেন্ট হিসাবে অনেকেই দিয়েছেন অর্থ. আজকের এই দিনে অবদানকারী সবাইকে অমর একুশের অনুষ্ঠান থেকে ও আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে বলে ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাংগুয়েজ মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনার ফাউন্ডার ট্রাষ্ট কমিটির সেক্রেটারী ও ফাউন্ডার্স ট্রাষ্টি বিশিষ্ট বিশিষ্ট সাংবাদিক মোহাম্মদ মকিস মনসুর জানিয়েছেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...