রংপুরে ৩০৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৫:১১ অপরাহ্ণ

রংপুরের ৩০৮ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে। এতে শিক্ষা কার্যক্রমসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সেইসঙ্গে দাপ্তরিক নানা কাজে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের।

রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, রংপুরে প্রধান শিক্ষক পদে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্য পদের সংখ্যা সর্বমোট ৩০৮টি। যার মধ্যে মিঠাপুকুরে ১০২টি, পীরগাছায় ৪৪টি, কাউনিয়ায় ৪৪টি, বদরগঞ্জে ৩৯টি, গঙ্গাচড়ায় ৩৫টি, রংপুর সদরে ২৪টি, পীরগঞ্জে ১৫টি এবং তারাগঞ্জে ৫টি।

প্রধান শিক্ষক পদে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্য আসনের ৩৫ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। বাকি ৬৫ শতাংশ শূন্য পদে সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এটাই বিধি। কিন্তু নিয়োগে, পদোন্নতিতে ধীরগতি। এ কারণে দুরবস্থায় পড়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো।

সূত্র জানায়, রংপুরে প্রায় তিন শতাধিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। আরও জানা গেছে, গ্রেডেশন তালিকা অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেয়ার কাজ চলছে। এখন প্রধান শিক্ষকের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত। তাই সরাসরি নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) হাতে। তারা পদোন্নতির সুপারিশে খুব ধীর। ৩৪তম বিসিএসের সারা দেশে নন-ক্যাডার থেকে সুপারিশ করা হয়েছিল ৮৯৮ জন। ৩৬তম থেকে ৩২৭, ৪১তম থেকে ২৭৬ ও ৪৩তম থেকে ২৭৬ জনকে সুপারিশ করেছিল পিএসসি। সুপারিশপ্রাপ্ত নন-ক্যাডার প্রার্থীদের অনেকে কিছুদিন চাকরি করে অন্য চাকরিতে চলে যান। ২০১৩ সালের পর প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের কেউ না কেউ প্রতিনিয়তই অবসরে যাচ্ছেন। অবসরের গতির তুলনায় পদোন্নতি ও সরকারি নিয়োগের গতি কম। এভাবে চললে কখনই শূন্য পদ পূরণ হবে না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটি যদি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকে তাতে লেখাপড়া ব্যাহত হয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। চারজন শিক্ষকের একজনকে চলতি দায়িত্ব বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে কাজ চালানো হয়। তাকে প্রায় প্রতিদিন উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন সভা, সেমিনারে অংশগ্রহণ এবং নানা প্রশাসনিক কাজ করতে হয়। আবার দায়িত্বপ্রাপ্তদের অধিকাংশ নারী হওয়ায় তাদের মাতৃত্বকালীন ছুটি বা অন্য ছুটি কাটাতে হয়। অনেকে প্রশিক্ষণে থাকেন। ফলে চারজনের দুজনকে বিদ্যালয় চালাতে হয়।

রংপুর জেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলামের কাছে প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন পদ শূন্য থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু, বদলি, অবসরজনিত কারণসহ নানা কারণে প্রধান শিক্ষকের এতগুলো পদ খালি হয়েছে। আমরা জেলার সম্ভাব্য প্রধান শিক্ষকদের তালিকা তৈরি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি, দ্রুত শূন্য পদে নিয়োগের ব্যবস্থা হবে। এ বিষয়ে মহাপরিচালক, সচিব ও মন্ত্রী অবগত আছেন। যে কোনো সময় উদ্যোগ নিয়ে এসব পদে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগের ব্যবস্থা করবেন।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...