এবার কোটা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরা

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০২৪, ৩:৩৫ অপরাহ্ণ

সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল করে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাদের আবেদনের ওপর আজ মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের আদালতে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের আদালতে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে আবেদনকারী দুই শিক্ষার্থী হলেন— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আলসাদি ভূঁইয়া এবং আহনাফ সাঈদ খান।

এর আগে, সকাল ১১টার দিকে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে এফিডেভিট দায়েরের জন্যে ওই দুই শিক্ষার্থীর পক্ষে আবেদন করা হয়। তাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।

তখন চেম্বার আদালতের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম এফিডেভিট দাখিলের জন্যে অনুমতি দেন। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন দায়ের করা হয়।

এর আগে গত ৪ জুলাই রিটকারী পক্ষের আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি মুলতবি করা হয়।

রিট আবেদনকারীপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ‘নট টুডে’ (আজ নয়) বলে আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলেন সর্বোচ্চ আদালত।

এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন হাইকোর্ট ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা গত ৯ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ৪ জুলাই শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।

ক্রম অনুসারে বিষয়টি উঠলে রিট আবেদনকারীপক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড মো. জহিরুল ইসলাম এক দিনের (নট টুডে) সময়ের প্রার্থনা জানান।

জানা যায়, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা দীর্ঘদিনের। ১৯৭২ সালের ৫ নভেম্বর এক নির্বাহী আদেশে সরকারি, আধাসরকারি, প্রতিরক্ষা এবং জাতীয়করণ করা প্রতিষ্ঠানে জেলা ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মহিলাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়। পরে বিভিন্ন সময় এ কোটা পদ্ধতির সংস্কার, পরিমার্জন ও পরিবর্তন করে সরকার।

২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল বাংলাদেশে। তার মাঝে ৩০ শতাংশই ছিল মুক্তিযোদ্ধা কোটা। বাকি কোটার মাঝে ১০ শতাংশ নারী কোটা, ১০ শতাংশ জেলা কোটা, ৫ শতাংশ কোটা ছিল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জন্য এবং এক শতাংশ কোটা ছিল প্রতিবন্ধীদের।

ওই বছরই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু করে। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল যে কোটা ৫৬ শতাংশ না হয়ে ১০ শতাংশ করা হোক। তাদের দাবির মুখে সে বছর পুরো কোটা পদ্ধতিই বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...