সব
বিজ্ঞপ্তি,
নগরের বন্দরবাজারস্থ করিম উল্লাহ মার্কেটের দোকানকোঠা নিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আমিরুল ইসলাম নজমুল মিথ্যাচার ও হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন মার্কেটের স্বত্বাধিকারী ছানা উল্লাহ ফাহিম।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মার্কেটের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমিরুল ইসলাম নাজমুল হাইকমিশনের মাধ্যমে সরকার ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার মিথ্যা অভিযোগ প্রেরণ করে আমাদের বারবার পুলিশি হয়রানির শিকার করছেন। আদালতে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে এখন তিনি গণমাধ্যমেও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন। আমরা তার মিথ্যা অভিযোগ ও বিরামহীর হয়রানির শিকার।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ২০০৩ সালের ৩০ আগস্ট ইংল্যান্ড প্রবাসী আমিরুল ইসলাম নজমুলের অনুরোধে করিম উল্লাহ মার্কেটের দ্বিতীয় তলার ৩৪ নম্বর দোকানটি মো. ফকরুল ইসলাম নামে একজনের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়। ভাড়াটিয়া বন্দোবস্ত গ্রহিতা আমিরুল ইসলাম নাজমুলকে নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করেন। ফকরুল ইসলামের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী ওই দোকানে ব্যবসা করলেও নজমুল তার ভগ্নিপতি এমএস সাঈদ, চৌধুরী বেলালকে দিয়ে ব্যবসা করাবেন বলে জানান। এর প্রেক্ষিতে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে প্রবাসী আমিরুল ইসলাম নজমুল ফোনে অভিযোগ করেন ভগ্নিপতি বেলাল দোকান ভাড়া, বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য সহায় সম্পত্তির আয় আত্মসাৎ করেছেন। তাঁর বাড়ি ও দোকান অন্যায়ভাবে দখল করে রেখেছেন। তিনি তার ভয়ে দেশে আসতে পারছেন না। টেলিফোনে একাধিকবার অনুরোধ করায় আমি বিষয়টি সমাধান করে দেই।’
ছানা উল্লাহ ফাহিম বলেন, ‘নজমুলের ভগ্নিপতি বেলালকে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হলে আমিরুল ইসলাম আমাকে একজন ভালো ভাড়াটিয়া দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন। অনুরোধের প্রেক্ষিতে একজন ভাড়াটিয়া ঠিক করা হলেও আমিরুল ইসলাম নাজমুল আমাকে না জানিয়ে একজন মোবাইল মেকানিককে দোকানটি ভাড়া দেন নজমুল। এ বিষয় জানার পর আমিরুল ইসলামকে তলব করলে তিনি আমার ওপর ছেড়ে দেন এবং ব্যাংক হিসাব নাম্বার দিয়ে ভাড়ার টাকা একাউন্টে জমা করে দিলেই চলবে বলে জানান।’
এর প্রেক্ষিতে মোবাইল মেকানিক দিলদার হোসেনের পাশাপাশি দোকানে আরেক জনকে বসিয়ে দেওয়ার কথা জানান ফাহিম। তিনি বলেন, ‘তারা উভয়ই ব্যবসা করতে থাকেন। ভাড়া নিয়মিতভাবে আমিরুল ইসলামের একাউন্টে জমাও হতে থাকে। তবে মেকানিকের ভাই বিদেশ চলে যাওয়াতে মেকানিক তার ভাইয়ের দোকানে চলে যান এবং ডেকোরেশনের বিনিময়ে কবির আহমদের কাছ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে যান।’
এসব ঘটনার এক পর্যায়ে প্রবাসী নজমুল ক্ষিপ্ত হয়ে নানা প্রোপাগান্ডা ও হয়রানি শুরু করেন বলে অভিযোগ করিম উল্লাহ মার্কেট কর্তৃপক্ষের।
মার্কেটের স্বত্বাাধিকারী ছানা উল্লাহ ফাহিম বলেন, ‘২০২০ সালে কোভিড চলাকালে হঠাৎ পুলিশ আমার বাড়িতে নোটিস নিয়ে আসে। আমিরুল ইসলাম নাজমুল লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধ একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর থেকে হাইকমিশনের মাধ্যমে সরকার ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার মিথ্যা অভিযোগ প্রেরণ করে হয়রানি করেছেন। পাশাপাশি সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটও বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন।’
আমিরুল ইসলাম নজমুল চুক্তিপত্রের বিভিন্ন শর্ত ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ করেন ফাহিম। তিনি বলেন, ‘অক্টেবর ২০২০ থেকে মে ২০২১ পর্যন্ত আমাদের জমিদারি ভাড়া বকেয়া রাখেন নজমুল। তাই ২০২১ সালের ৩১ মে আইনজীবীর মাধ্যমে শর্ত ভঙের জন্য সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১০৬ ধারায় লিগ্যাল নোটিস প্রেরণ করি।’
তিনি অভিযোগ করেন, প্রবাসী নজমুল এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে একাধিকবার মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া দিয়েছেন এবং থানায় সাধারণ ডায়রি ও আদালতে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলাগুলো এখনো চলমান উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ, জিডি ও মামলা দিয়ে আমিরুল ইসলাম বারবার আমাদেরকে তদন্তের মুখোমুখি করে চরম হয়রানি করছেন।’
গণমাধ্যমে নজমুল ইসলামের নানা অভিযোগ প্রসঙ্গে ছানা উল্লাহ ফাহিম বলেন, ‘ভাড়াটিয়া ফকরুল ইসলামের স্ত্রীকে সরানোর বিনিময়ে দুই লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। নজমুল চেকের মাধ্যমে আমাদেরকে ভাড়া দেওয়ার তথ্যও সত্য নয়।’
এছাড়া মামলা বিচারাধীন অবস্থায় অন্যের হস্তক্ষেপ এবং অপপ্রচারের মাধ্যমে মার্কেট কর্তৃপক্ষকে অপদস্ত করার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ তার।
Developed by: Helpline : +88 01712 88 65 03