কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন

মতিয়ার চৌধুরী-লন্ডন,

  • প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৭:৫৮ অপরাহ্ণ

কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে বাংলা সোসাইটির উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হয়েছে। সোসাইটির ইভেন্টস অফিসার আনিয়া সোফিয়া প্রামাণিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই বিশেষ আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাতৃভাষা দিবসের ঐতিহাসিক তাৎপর্য এবং এটি বাঙালি পরিচয়ের সঙ্গে গভীরভাবে কীভাবে জড়িত, সে সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি পালিত হয়, যা ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে আত্মত্যাগকারী শহীদদের স্মরণ করে। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির মতো একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ দিবস উদযাপনের তাৎপর্য গভীর, কারণ ইতিহাসজুড়ে ছাত্র আন্দোলন পরিবর্তনের শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে । একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা সেই সক্রিয়তা ও অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের প্রতিফলন।
অনুষ্ঠানে তিনজন বিশিষ্ট অতিথি বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ড. পল্টু রঞ্জন দত্ত, রেহানা খানম রহমান বিএম, এবং রুবাইয়াত শারমিন ঝরা। তাঁদের আলোচনায় ভাষা ও পরিচয়ের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। ড. পল্টু দত্ত আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেন, মস্কোতে অধ্যয়ন এবং বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা থেকে তাঁর ভাবনা শেয়ার করেন। রেহানা খানম রহমান ফিলিস্তিনের ভাষা আন্দোলন ও ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলনের মধ্যে সাদৃশ্য তুলে ধরেন। রুবাইয়াত শারমিন ঝরা ভাষার সঙ্গে শিল্পের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন এবং কিভাবে ভাষা সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারে, তা ব্যাখ্যা করেন। অনুষ্ঠানকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলতে রুবাইয়াত শারমিন ঝরা একটি ইন্টারঅ্যাক্টিভ নৃত্য কর্মশালা পরিচালনা করেন, এবং রেহানা খানম রহমান একটি হৃদয়স্পর্শী কবিতা আবৃত্তি করেন। এই সাংস্কৃতিক পরিবেশনাগুলো দর্শকদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে, বিশেষ করে যারা আগে বাংলা শিল্প-সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত ছিলেন না। ফলে, এই আয়োজন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি গভীর অনুরাগ সৃষ্টি করতে সক্ষম ।

অনুষ্ঠানটির সফল সমাপ্তির পর ইভেন্টস অফিসার অতিথি বক্তাদের, তাঁদের পরিবার এবং সকল সমর্থকদের ধন্যবাদ জানান, যাঁদের অবদানে সন্ধ্যাটি স্মরণীয় হয়ে উঠেছে। “এই আয়োজন কেবল ইতিহাস স্মরণের জন্য ছিল না, বরং ভাষার শক্তি কীভাবে পরিচয় ও সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তিকে গঠন করে, তা উদযাপনেরও একটি সুযোগ ছিল,” বলেন আয়োজক আনিয়া সোফিয়া প্রামাণিক। তিনি আরো বলেন “আমার সহপাঠীদের সঙ্গে এটি ভাগ করে নিতে পারা এবং অর্থবহ আলোচনা ও শিল্পের মাধ্যমে একত্রিত হওয়ার সুযোগ পাওয়া সত্যিই গৌরবের বিষয়।” কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি বাংলা সোসাইটি ভবিষ্যতেও আরও বৃহৎ পরিসরে এমন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে, যাতে ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অব্যাহত থাকে।

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

Developed by: Web Design & IT Company in Bangladesh