হার্ভার্ড-এর জন্য বরাদ্দকৃত ২২০ কোটি ডলারের তহবিল স্থগিত করলো ট্রাম্প প্রশাসন

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২:০৩ অপরাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় হোয়াইট হাউজের একগুচ্ছ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প প্রশাসন তাদের জন্য বরাদ্দকৃত ২২০ কোটি ডলারের ফেডারেল তহবিল তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত ঘোষণা করেছে।

মার্কিন শিক্ষা বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “হার্ভার্ডের আজকের অবস্থান দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উদ্বেগজনক মানসিকতাকে আরও স্পষ্ট করেছে। ইহুদি শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও শিক্ষার পরিবেশে ব্যাঘাত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

সম্প্রতি গাজা যুদ্ধ ও ইসরায়েলপন্থী নীতির বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলনের প্রেক্ষিতে হোয়াইট হাউজ হার্ভার্ডকে ১০টি ক্যাটাগরিতে পরিবর্তনের প্রস্তাব দেয়। এর মধ্যে ছিল পরিচালনায় পরিবর্তন, ভর্তির প্রক্রিয়ায় সংস্কার, ইহুদি বিদ্বেষের মতো বিষয়ে তদন্ত এবং সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনার মতো সংবেদনশীল শর্ত।

তবে সোমবার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্বার শিক্ষকদের উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে স্পষ্ট ভাষায় জানান, “সরকারের চাপের মুখে আমাদের প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার বিসর্জন দেওয়া হবে না। আমরা হোয়াইট হাউজের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি।”

তিনি বলেন, “ইহুদি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হলেও সরকারের প্রস্তাবগুলো সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা হরণের শামিল।”

এর আগেও হার্ভার্ডের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ক্লডিন গে এক কংগ্রেস শুনানিতে ‘ইহুদিদের গণহত্যার আহ্বান’ বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন এবং পরবর্তীতে পদত্যাগ করেন।

এর পাশাপাশি হার্ভার্ডের একাধিক প্রফেসর ফেডারেল সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন, যেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং একাডেমিক স্বায়ত্তশাসনের ওপর আঘাতের অভিযোগ তোলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করা হয়েছিল একই অভিযোগে, যদিও পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি সরকারের কিছু শর্ত মেনে নেয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বাধীনতা বনাম রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের নতুন মাত্রা তৈরি করেছে। প্রশ্ন উঠছে—অভিজাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কি তাদের মূলনীতি ধরে রাখতে পারবে, নাকি রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হবে?

সূত্র: বিবিসি

Print This Post Print This Post

এই সম্পর্কিত আরও খবর...