যমুনা নদীতে আকস্মিক পানি বৃদ্ধি, তলিয়ে গেছে চরের বাদামসহ অন্যান্য ফসল

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ৪ মে ২০২৫, ৬:৫৪ অপরাহ্ণ

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে আকস্মিক পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে গেছে চরের বাদামসহ অন্যান্য ফসল।

এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা অপরিপক্ক বাদাম তোলার চেষ্টা করছেন। শনিবার বিকেল থেকে স্থল ইউনিয়নের সন্তোষা চরের বাদাম চাষীরা পানিতে নেমে অপরিপক্ক বাদাম তুলছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত বহু কৃষক পরিবার লোকশানের মুখে পড়েছেন।

চৌহালী উপজেলা কৃষি অফিস ও চাষীরা জানান, চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীতে নতুন করে জেগে ওঠা চরে বিগত বছরের ন্যায় এবারও বাদাম চাষ করেছিল বহু কৃষক। স্থল ইউনিয়নের সন্তোষা, কোচগ্রাম, বসন্তপুর, মালিপাড়া, ছোট চৌহালী-বড় চৌহালী, তেঘুরি, স্থল চর, মিস্রিগাতি ও লাঙ্গলমুড়া, উমারপুর ইউনিয়নের দত্তকান্দি, ছোল, উমারপুর, খাষকাউলিয়া, ঘোড়জান, সদিয়া চাঁদপুর, স্থল ও খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের পশ্চিমচর এলাকা প্রায় ২ হাজার ২ শত হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ করা হয়। অল্প কিছু দিনের মধ্যে বাদাম ঘরে তোলার প্রস্তুতি ছিল কৃষকদের। আকস্মিক জোয়ারে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের নিচু এলাকার বাদামেখেত তলিয়ে যায়। এতে দক্ষিন ও পশ্চিমাঞ্চলের তিন শতাধিক হেক্টর জমির বাদাম নষ্ট হয়েছে। একারনে ওই এলাকার শতাধিক কৃষকেরা বড় ধরণের ক্ষতির মধ্যে পড়েছে।

সন্তোষা চরের আবুশামা, লোকমান হোসেন, ছানোয়ার হোসেন, মোসছেদ আলী ও জয়নাল হোসেন জানান, অন্যান্য বছরে বাদামের বাম্পার ফলন দেখে এবার বেশি জমিতে চাষ করি। তবে আমাদের এলাকায় পানিতে তলিয়ে বহু জমির বাদাম নষ্ট হয়েছে। একারনে কোমর পানিতে নেমে অপরিপক্ক বাদাম তুলতে হচ্ছে। এদিকে যমুনার পশ্চিম তীর এনায়েতপুরে দেখা যায়, পানিতে জমি তলিয়ে যাওয়ায় বাদাম তুলে নদীর পাড়ে কৃষক পরিবারের নারী, শিশুসহ সব সদস্য মিলে বাদাম ছাড়াচ্ছেন। আবার কোথাও কোথাও তারা জমির পাড়ে শুকনা স্থানে বাদাম রোদে শুকাচ্ছে। এতে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সন্তোষা গ্রামের ইউপি সদস্য হাসান আলী জানান, কৃষকদের স্বপ্ন পানিতে তলিয়ে গেছে, বাদামের জমি তলিয়ে যাওয়ায় বহু কৃষক এবছর লোকশানের মুখে পড়বে। সরকারী ভাবে তাদের সহায়তার দাবি জানাই।

এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলার স্থল ইউনিয়নের উপহসকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুহুরাইয়া জানান, জানান, যমুনার চরাঞ্চলের বাদাম জমি তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে সরেজিমন পরিদর্শন করেছি। অপরিপক্ক বাদাম তুলে বহু কৃষক পরিবার লোকশানের মুখে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে, সরকারী সহায়তা এলে দেয়া হবে। এছাড়া বিশেষ প্রণোদনার জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার বলেন, অসময়ে পানি বৃদ্ধির কারণে নদী চর এলাকায় বাদামের জমি ডুবে গেছে। কৃষকেরা পানির মধ্যে নেমে ভেজা বাদাম সংগ্রহ করলেও সুফল পাবে না। অধিকাংশ বাদাম নষ্ট হয়ে যাবে। পানি বৃদ্ধির কারণে নদী এলাকায় প্লাবিত ধান, কাউন, তিল সহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষতি হবে তিনি উল্লেখ করেন।

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

Developed by: Web Design & IT Company in Bangladesh