আওয়ামী লীগ দমন-পীড়ন করে নিজেদের ‘মৃত্যু’ ঘটিয়েছে : সালাহউদ্দিন

স্বদেশ বিদেশ ডট কম

  • প্রকাশিত: ১১ মে ২০২৫, ৬:১৮ অপরাহ্ণ

দমন-পীড়নের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নিজেদের রাজনীতির মৃত্যু ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, “সন্ত্রাস দমন আইনে সংশোধন এনে বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের (আওয়ামী লীগ) রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করবে-সেটুকুকে আমরা স্বাগত জানাই। এখানে আপনাদের বুঝতে হবে, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে স্বীকৃতি কি এখন পৃথিবী দেয়? দেশের মানুষ দেয়?

“আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদী শক্তি, আওয়ামী লীগ একটি মাফিয়া শক্তিতে পরিণত হয়েছিল, আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদ ও মাফিয়াতন্ত্রের চর্চা করেছে বাংলাদেশের মানুষের ওপরে এবং তারা যে অত্যাচার-নিপীড়ন-নির্যাতন-গণহত্যার মধ্য দিয়ে তাদের পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছে, নিজেদের রাজনীতির মৃত্যু ঘটিয়েছে।”

রোববার সকালে ঢাকার মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে সেখানে নাগরিক কোয়ালিশনের উদ্যোগে ‘সাংবিধানিক সংস্কারে নাগরিক জোটের ৭ প্রস্তাব’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠান হয়।

অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি, জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দলের দাবির মুখে শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ এবং দলটির নেতাদের বিচার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়।

আওয়ামী লীগে রাজনীতি চর্চা নেই মন্তব্য করে সালাহউদ্দিন বলেন, “এটা একটা মাফিয়া পার্টি, মাফিয়া শক্তি, এটা একটা ফ্যাসিবাদী দল। সুতরাং রাজনৈতিক দলের কোনো তকমা দিতে চাই না। আওয়ামী লীগের ডিএনএতেই গণতন্ত্র নাই…রাজনীতি চর্চা হবে কীভাবে?”

এর আগে সংলাপ অনুষ্ঠানে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য যেই পলিটিকাল পার্টি হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং তার অ্যাসোসিয়েটদের অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার জন্য যে বিধানটা করা হবে, সেই আইনে কিছুটা সংশোধনী আনতে হবে মনে হয়। কারণ ওখানে দল নিষিদ্ধের কথা বলা আছে, সম্ভবত কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে গেলে সেখানে কিছু সংশোধনী আনতে হবে, সেটা এনে তারপর প্রজ্ঞাপন হলে ভালো হবে।

“এটা হচ্ছে আমাদের পক্ষ থেকে এই জাতির আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদের রক্তের প্রত্যাশা আকাঙ্ক্ষা এদেশের জনগণের প্রত্যাশা যে বাংলাদেশে যেন কোনদিন স্বৈরাচার এবং ফ্যাসিবাদের উৎপাদন না হয়।”

আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শাহবাগের কর্মসূচিতে বিএনপি কেন যায়নি, তার ব্যাখ্যায় সালাহউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা (বিএনপি) শাহবাগে কেন যাব? আমাদের দাবি (বিচার) তো মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে দীর্ঘ কয়েক মাস আগেই লিখিতভাবে দিয়েছে, মৌখিকভাবে বলেছি, আমরা বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে বলেছি, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বলেছি।

“আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে দীর্ঘ কয়েক মাস আগে এই দাবিটা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে লিখিতভাবে প্রদান করেছিলাম যে- গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় আনতে হবে, বিচারের আওতায় আনতে হবে। “তখন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা যদি বিষয়টা আমলে নিতেন, তাহলে হয়তো আজকে, গতকালকে বা তার আগের দিন এ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে সরকারকে পড়তে হতো না।”

বিএনপি অনেক আগে থেকেই আওয়ামী লীগের বিচার দাবি করে আসছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে, সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে, একটা বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই যে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করবে- এই ঘোষণা দেওয়ার জন্য আমরা স্বাগত জানাই সরকারের এ পদক্ষেপকে।”

এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমি আশঙ্কা করছি, যদি গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে, গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথপরিক্রমায় যদি দীর্ঘায়িত পদক্ষেপ নেওয়া হয়, কৌশল অবলম্বন করা হয়- হয়ত সরকারকে বিব্রত হতে পারে সামনে।”

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

Developed by: Web Design & IT Company in Bangladesh